লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

শাবির আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা : প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, শিক্ষামন্ত্রীকে আমন্ত্রণ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাজমুল হুদা, শাবি প্রতিনিধি : সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৬৩ ঘণ্টার অনশন ও টানা ১৩তম দিনের মতো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। অনশন ভাঙার পরও এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে আন্দোলনরতদের মধ্যে অসুস্থদের চিকিৎসায় তাদের পাশে দাঁড়ানোয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অনশনকারীদের প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় উপাচার্যকে সরানো হচ্ছে বলেও ক্যাম্পাসে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বুধবার সকালে কথাসাহিত্যিক, লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে অবরোধ সরিয়ে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মূল ফটক, আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবন ও শিক্ষা

ভবনের তালা খুলে দেয়া হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ : গতকাল শুক্রবার বিকাল সোয়া ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষার্থী সামিউল এহসান শাফিন ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার ঘটনায় আহত এবং অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব খরচ পরিশোধ করায় আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুলিশের হামলার ঘটনায় আহত সজল কুন্ডুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রীও আমাদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সব শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
শিক্ষামন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে আমন্ত্রণ : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করার এবং আলোচনার জন্য ক্যাম্পাসে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সামিউল এহসান শাফিন ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ক্যাম্পাসে আসার এবং একই সঙ্গে আমাদের বিষয় ও আমাদের ক্যাম্পাস নিয়ে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। ক্যাম্পাসে তাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রী দ্রুতই ক্যাম্পাসে এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবেন। এ সময় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম যেন প্রতিবাদের ভাষা : ‘মৃত্যু অথবা মুক্তি’ শীর্ষক উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে রংতুলির আঁচড়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলছেন। আগের ঘোষণা অনুযায়ী অহিংস আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কিলো রোডে আলপনা এঁকেছেন তারা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এ আলপনা আঁকেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা। এ সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী গান, ছড়া, কবিতা আবৃত্তি করা হয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরেও উপাচার্যবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান ও কার্টুন এঁকে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। অনশনরতদের স্মরণে এবং অহিংস আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতিবাদী এই আলপনা আঁকা হয় বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। এছাড়া গতকাল দিবাগত রাতে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘হীরক রাজার দেশে’ ও ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
উপাচার্যকে সরানোর গুঞ্জন : অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য পদ থেকে সরানো হচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়ানো হয়। তবে এ নিয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো বক্তব্যও দেয়নি কেউ।
নতুন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনশনকারীরা : অনশন ভাঙার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। যদিও মাহিন শাহরিয়ার রাতুল ছাড়া সবাই নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করছেন। তবে তাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যার। অনশনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, খাবার ঠিকমতো হজম হচ্ছে না। মাথাব্যথা কিংবা ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটছে। অনেকের শরীরই দুর্বল। হাঁটাচলায়ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এজন্য কয়েকজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছেন বলেও জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনে পুলিশি হামলা হলে এর প্রতিবাদ জানিয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, আমরণ অনশন, মশাল মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়