কাগজ প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশন থেকে চিকিৎসাভাতা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেছেন, এটা আমার মৌলিক অধিকার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাও চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, হেয় করার জন্যই সিইসি আমাকে ‘রোগাক্রান্ত ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আমার অসুখের বিষয় আর চিকিৎসাভাতার কথা তুলে ধরার নিকৃষ্ট পথ বেছে নিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃিিততে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, বছরে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা চিকিৎসাভাতা নেন মাহবুব তালুকদার। বিবৃতিতে তিনি সে বক্তব্যেরও ব্যাখ্যা দেন।
বিবৃতিতে মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার প্রোস্টেট ক্যান্সার। চিকিৎসার কারণেই বেঁচে আছি। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চিকিৎসা পাওয়া আমার মৌলিক অধিকার। ‘চিকিৎসায় অর্থ ব্যয় সম্পর্কে আমার বক্তব্য’ শিরোনামে ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা নির্বাচন ভবনে এক প্রেস কনফারেন্স করে আমার চিকিৎসার ব্যয় বছরে ৩০ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি অবশ্য খরচের প্রকৃত হিসাব দেননি। তিনি আমাকে রোগাক্রান্ত ব্যক্তি বলে উল্লেখ করে বলেছেন, আমি কখনো আইসিইউতে বা কখনো সিসিইউতে থাকি। কিন্তু ইচ্ছা করলেই কেউ আইসিইউ বা সিসিইউতে থাকতে পারে না। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে বিশদভাবে অবহিত করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
প্রকৃতপক্ষে আমি নির্বাচন কমিশনার হওয়ার সময় থেকেই প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত। ক্যানসার কালক্রমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি সিঙ্গাপুর ও ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক দিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দুই দফা শারীরিক পরীক্ষা করে সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমোদন দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনারদের চিকিৎসাবিধি অনুযায়ী আমার চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছে। তবে গত দুই বছরে আমি চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে বিদেশে যাইনি। বরং এই দুই বছরে চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ নিজের খরচে আমি আমেরিকা গিয়েছি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বর্তমানে কর্মরত নির্বাচন কমিশনাররা এবং অবসরপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনাররা সবাই প্রাপ্যতা ও বিধি অনুযায়ী কমিশন থেকে চিকিৎসার খরচ নিয়ে থাকেন। কে এম নূরুল হুদা নিজেও নির্বাচন কমিশন থেকে চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অসুখের যথাযথ চিকিৎসা পাওয়া আমার মৌলিক অধিকার। চিকিৎসার কারণেই আমি এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি। নির্বাচন বিষয়ে আমার ভিন্নধর্মী অবস্থানের নিমিত্তে সিইসি তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য চিকিৎসার বিষয় উল্লেখ করে আমার বিরুদ্ধে এহেন নিকৃষ্ট পথ বেছে নিয়েছেন।