লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

মামলার বিষয়ে জানত না পরিবার : আসামির মৃত্যুর ২০ বছর পর আপিল নিষ্পত্তি!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি : আপিল নিষ্পত্তি হয়েছে আসামির মৃত্যুর ২০ বছর পর! গত বৃহস্পতিবার ওই আপিলটি নিষ্পত্তি করে রায় দেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায় অনুযায়ী, অভিযুক্ত আসামি আব্দুস সোবহানকে নিম্ন আদালতের দেয়া ৫ বছরের সাজা বাতিল এবং জরিমানা মওকুফ হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজশাহীর অবিভক্ত চারঘাটের ১নং বাজুবাঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন আব্দুস সোবহান। তার বিরুদ্ধে তিনটি হাটবাজার লিজ দেয়া সাড়ে ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ১৯৮২ সালের ৯ জুন তার বিরুদ্ধে চারঘাট থানায় মামলা করে। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয় ওই বছরের ১০ নভেম্বর। বিচার শেষে ১৯৮৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রায় দেন নিম্ন আদালত। রায়ে তাকে ৫ বছরের জেল ও ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে ১৯৮৮ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন আব্দুস সোবহান (আপিল নং ১৮৬১৯৮৮)। এই আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় ২০০১ সালের ১৬ জুন মারা যান সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান। কিন্তু আপিলে দুদককে পক্ষ করা হয়নি। পরে দুদক এই মামলায় পক্ষ হয়ে শুনানিতে অংশ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে আসামির বড় ছেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর ২০ বছর পরেও যে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, এই সংবাদ জানার পর ভালো লাগা ছাড়া আর কী বলার আছে। এই মামলার বিষয়ে কিছুই জানতেন না। এমনকি কোনো নোটিসও পাননি।
তার দাবি, বাবার নামে টাকা আত্মসাতের যেসব মামলা হয়েছে, তাই যদি হতো তাহলে জায়গা জমি ও ঘরবাড়ি করে যেতে পারতেন। কিন্তু করতে পারেননি। তবে কীভাবে মামলা হয়েছে তাও বুঝে উঠতে পারেননি। সরজমিন তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবার আমলে রেখে যাওয়া মাটির ঘরটা এখনো রয়েছে। এই বাড়িতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুস সোবহানের ২ ছেলে।
বাজুবাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন জানান, ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে মরহুম আব্দুস সোবহান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার জানা মতে, ১৯৮২ সালের দায়েরকৃত মামলায় আপিল করে ১৯৮৩ সালে অনুষ্ঠিত ভোটে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপরে মামলাজনিত কারণে ১৯৮৪ সালে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। পরে আর নির্বাচন করেননি। জানা মতে, মরহুম আব্দুস সোবহান একজন সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া (মিতি)। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
শাহীদ আহমেদ জানান, হাইকোর্ট বিভাগ অনেক পুরনো একটি আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন। এ মামলার আপিলকারী ২০ বছরের বেশি সময় আগে মারা গেছেন। আপিলকারী মারা গেলে আইনের বিধান হচ্ছে আপিলটা অ্যাবেট (বাদ) হয়ে যাবে দণ্ড ও সাজার ক্ষেত্রে। কিন্তু জরিমানাটা থেকে যাবে। এখন এই জরিমানার বিষয়ে শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করেছেন। এর মাধ্যমে আপিলের নিষ্পত্তি ঘটল।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া (মিতি) বলেন, যেহেতু আপিল মঞ্জুর হয়েছে, সেহেতু ওই চেয়ারম্যানকে নিম্ন আদালতের দেয়া ৫ বছরের সাজা বাতিল এবং জরিমানা মওকুফ হয়ে গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়