লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টসে আগুন : বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ছুটির দিন হওয়ায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না যায়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, কারখানার ভেতের শিপমেন্টের জন্য রাখা অনেক তৈরি পোশাক ছিল। এসব পোশাক সবই পুড়ে গিয়ে বিপুল পরিমাণের ক্ষতির আশঙ্কা করেন তারা।
এদিকে কারখানাটি মহাসড়কের পাশে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই ব্যাপক যানজট লাগে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
প্রতিষ্ঠানের সুইং বিভাগের শ্রমিক হাবিব জানান, গতকাল শুক্রবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে জাহিন নিটওয়্যারস লিমিটেডের কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা রক্ষিরা প্রথম বের হয়ে ২নং ইউনিটের সামনে ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কিন্তু শুক্রবার হওয়ায় বেশিরভাগ ইউনিট বন্ধ ছিল। তবে প্রতিটি ইউনিটে কিছু শ্রমিক তৈরি পোশাক প্যাকেট করে শিপমেন্টের জন্য ৬নং ইউনিটে নেয়ার কাজ করছিলেন।
তিনি আরো জানান, প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বেশ কিছু শ্রমিক বসবাস করেন। দূর থেকে ধোঁয়া দেখে তারা আগুন নেভাতে আসেন। এ সময় ধোঁয়া পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য পাশের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির ২নং ইউনিটের দোতলা শেডের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে শ্রমিকরা সেখানে ঢুকে জানালার কাচ ভেঙে দেন যাতে ধোঁয়া বের হতে পারে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে তারা নেমে এসে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক শফিউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, আগুন লাগার পরপর নিরাপত্তা রক্ষিরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে বলেন। তারা আসতে ৩০-৩৫ সময় লাগে। এর মধ্যে ২, ৪, ৫ ও ৬নং ইউনিটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা কর্মীরা পাশের পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। পুলিশ বিদ্যুৎ বিভাগকে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিটের উপরের অংশ স্টিল স্ট্রাকচারের। এই উপরের অংশ কাঠ ও বোর্ড দিয়ে ভেতরের অংশে ডেকোরেশন করা। আমরা মূলত গেঞ্জি, পলো শার্ট, জ্যাকেট, ট্রাউজার এসব তৈরি করি। প্রতিটি ইউনিটের উপরের অংশগুলোতে এসব তৈরি পোশাক প্রচুর পরিমাণে ছিল। আগুন পোশাকে লেগে বেশ উঁচু হয়ে জ্বলতে থাকে। আমাদের প্রতিটি ইউনিটই বিশাল। এর মধ্যে ৫নং ইউনিট ২৫ হাজার স্কয়ার ফিটের। ফলে আগুনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টায় আগুন লাগার খবর পাই। বেলা পৌনে ৫টায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর একে একে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও, বন্দরসহ আশপাশের ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো এসে আগুন নেভানোর কাজ করে। সন্ধ্যা ৭টায় সময় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছিল।
তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
তিনি জানান, কারখানা কমপ্লেক্সের ৩টি দোতলা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আগুন জ্বলছিল। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, কারখানার পরিসর বড় হওয়ায় এবং আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে কারখানা বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকা পড়েনি বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। কোনো হতাহতের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
গতকাল রাত ৮টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়