লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

দেউলিয়াত্বের মুখে শ্রীলঙ্কা : বাড়ির চেয়ে ব্যবহৃত গাড়ির দাম বেশি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সুপারমার্কেটের তাকগুলো খালি হয়ে গেছে। খাবার সরবরাহ করতে পারছে না রেস্তোরাঁগুলো। পর্বতসম ঋণের চাপে দেউলিয়ার মুখে থাকা শ্রীলঙ্কার খুব সাধারণ দৃশ্য এটি। তবে এ পরিস্থিতি ব্যবহৃত গাড়ি ব্যবসায়ীদের জন্য সৌভাগ্য হয়ে দেখা দিয়েছে। ঘাটতির কারণে একটি ব্যবহৃত গাড়ি জনপ্রিয় অঞ্চলে একটি বাড়ির চেয়ে বেশি দামি হয়ে উঠেছে। খবর ইয়াহু ফাইন্যান্স।
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার শ্রীলংকা দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সব পণ্যের দামই রেকর্ড উচ্চতায় ঠেলে দিয়েছে। সরকার খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় ডলার সাশ্রয় করতে অতিপ্রয়োজনীয় নয় এমন আমদানি সংকুচিত করেছে। এতে দেশটিতে গাড়ি আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। দুই বছর ধরে চলা এ নিষেধাজ্ঞায় গাড়ির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এ অবস্থায় ব্যবহৃত গাড়ি কিনতেও বিশ্বের সর্বোচ্চ দাম দিতে বাধ্য হচ্ছেন মরিয়া ক্রেতারা।
কয়েক সপ্তাহ ধরে কলম্বোর উপকণ্ঠে বিক্রয় কেন্দ্রগুলোয় ঘুরছেন অ্যান্টনি ফার্নান্দো। তিনি বলেন, মেয়ের জন্য প্রায় এক বছর ধরে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি কেনার চেষ্টা করছি। প্রথমে ভেবেছিলাম, দাম কিছুটা হলেও কমবে। তবে এখন দেখছি অপেক্ষা করার কারণে আরো বেশি দাম দিতে হচ্ছে। বর্তমানে গাড়ির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
পাঁচ বছরের পুরনো একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারের জন্য অনলাইনে ৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি দাম হাঁকা হয়েছে। গাড়িটির দাম আমদানি বন্ধ হওয়ার আগের তুলনায় তিন গুণ। এ অর্থ কলম্বোর মধ্যবিত্ত অধ্যুষিত এলাকায় একটি বাড়ি কিংবা শহরে একটি নতুন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার জন্য যথেষ্ট।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় ডিলারশিপের মালিক শরৎ ইয়াপা বান্দারা বলেন, একটি গাড়ি ও একটি বাড়ি সাফল্যের প্রতীক। তাই বেশির ভাগ মানুষ উচ্চ দামেও এগুলো কিনতে ইচ্ছুক।
কলম্বোর ট্রাফিকপূর্ণ রাস্তায় গাড়ির মালিকানার বিষয়টি খুব প্রয়োজনীয় হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। কারণ দেশটির রেল ও বাস নেটওয়ার্কেরও বিপুল চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় ঠেলে গণপরিবহনগুলোয় যাতায়াত করে। ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য দেশটির ট্যাক্সির সংখ্যা দ্রুত কমে গেছে। অনেকেই বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে এখনো যারা ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করছেন, তারাও চাহিদার সুযোগে ভাড়া দ্বিগুণ করে দিয়েছেন।
করোনা মহামারি শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরো পঙ্গু করে দিয়েছে। করোনাজনিত বিধিনিষেধে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির পর্যটন খাত। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে প্রবাসী আয়ও। ফলে দেশটি ভয়াবহ ডলার সংকটে পড়ে। এ অবস্থায় বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় করতে ২০২০ সালের মার্চে সরকার নতুন গাড়িসহ আমদানিতে একটি বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যদিও কলম্বোর এ নীতি ডলার সংরক্ষণে খুব বেশি কাজে আসেনি। পরিবর্তে দেশটির নাগরিকরা গুরুত্বপূর্ণ পণ্য পেতে লড়াই করছেন।
খুচরা বিক্রেতারা চাল সরবরাহ চালু রাখতে পারলেও রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ সেগুলো রান্নার গ্যাস পাচ্ছে না। চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ফসল ফলানোর মতো সারও পাচ্ছেন না কৃষক। বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, শিগগিরই শ্রীলঙ্কা ঋণখেলাপি হতে পারে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রæতি পূরণের আশা দেখানো হচ্ছে। স¤প্রতি দেশটি চীনকে ঋণ পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়