লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

ঢাকার খাল উদ্ধার ও সংরক্ষণ চেষ্টা : মেয়র আতিকুলকে সাধুবাদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে অসংখ্য খালের সরাসরি সম্পর্ক ছিল। সেই খালগুলো অধিকাংশেরই মরণদশা। এসব খাল ভরাট করে অবৈধভাবে দোকানপাট, বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। খালগুলো উদ্ধারে ওয়াসা নানামুখী উদ্যোগ নিলেও আশানুরূপ সাফল্য দেখিনি। ঢাকার ২টি সিটি করপোরেশন নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর খালগুলো দখল-দূষণমুক্ত করতে চেষ্টা করছে। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে খাল পরিষ্কার ও খালপাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। অভিযানে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম সরাসরি অংশ নিয়ে সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করছেন। তাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা মনে করি, ঢাকার ভেতরে জলাভূমির স্বল্পতা দূর করা, জলাবদ্ধতা কমানোর সহায়ক পথ উন্মুক্ত করা, সর্বোপরি রাষ্ট্রের সম্পদকে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের স্বার্থে সব খাল উদ্ধার করার সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নেয়া উচিত। মেয়র বলছেন, নগরের খালগুলো দৃষ্টিনন্দন করে বিদেশের আদলে নতুন করে সাজাতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ লক্ষ্যে খালের ওপরে অবৈধ দখল উচ্ছেদে কঠোরভাবে মাঠে নেমেছেন সংস্থাটি। এরই মধ্যে নগরীর লাউতলা খালের ওপর স্থাপিত ট্রাক টার্মিনালসহ অনেক বহুতল ভবন ভেঙে খাল খননের কাজ শুরু করেছে। খাল উদ্ধারে সরকারের কাছে ১০০ কোটি টাকা জরুরি বরাদ্দও চেয়েছেন সংস্থাটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। ঢাকা ‘প্রাকৃতিকভাবেই’ ছিল জলাবদ্ধতাবিহীন নগরী। এক সময় ঢাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মূলে ছিল শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা খাল। যেগুলো নগরীর চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। রাজধানীতে ৪৭টি খাল ছিল। এখন ২১টি খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। টিকে থাকা ২৬টি খালও অনেকটা প্রাণহীন। গত ১০ বছরে ঢাকার ১১টি খাল নর্দমা আর ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আবর্জনায় জমাটবাঁধা খালের নর্দমায় খুঁটি পুঁতে পাটাতন বসিয়ে তার ওপর একের পর এক বস্তি তোলা হয়েছে। স্থায়ীভাবে আটকে গেছে পানিপ্রবাহের পথ। ৩০-৩২ বছর আগেও ঢাকার প্রান্তঃসীমায় স্রোতবাহী যেসব খালে পণ্যবাহী বড় বড় নৌকার আনাগোনা ছিল, সে খালগুলো এখন দুই-আড়াই ফুট চওড়া নর্দমার আকার ধারণ করেছে। দখলবাজদের আগ্রাসী থাবায় খালগুলোর অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এমনকি সরকারি ওই দপ্তরে খালগুলোর কোনো নথি নেই। সায়েদাবাদ থেকে দয়াগঞ্জ, রাসেল স্কয়ার থেকে গ্রিন রোড চৌরাস্তা, মহাখালী থেকে নিকেতন বক্স কালভার্ট, ইব্রাহীমপুর বক্স কালভার্ট- প্রায় ১০ কিলোমিটার খাল ভরাট করে বক্স কালভার্ট করা হয়েছে। এ কারণে বর্ষায় পানি নিষ্কাশনে এসব খাল কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এছাড়া বিদ্যমান ২৬টির মধ্যে ৫টি খাল (হাজারীবাগ, বাইশটেকী, কুর্মিটোলা, মাণ্ডা ও বেগুনবাড়ি) ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড হয়ে রয়েছে। ওয়াসার এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশেই প্রভাবশালী মহল বছরের পর বছর ধরে খাল দখলের মচ্ছব চালিয়েছে। সরকারের উচিত প্রতিটি খালের অবস্থান চিহ্নিত করে সেগুলোকে উদ্ধারের লক্ষ্যে জরুরিভিত্তিতে তৎপর হয়ে ওঠা। সিটি করপোরেশন খাল উদ্ধারে চেষ্টা করছে। এতে নানারকম বাধাবিপত্তি আসবে, এটাই স্বভাবিক। সরকারকে কঠোর হস্তে এসব দুর্বৃত্তকে দমন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়