লাইসেন্স ছাড়াই ৭ বছর ট্রাক চালায় জসিম

আগের সংবাদ

ফাইভ-জিতে অনাগ্রহ কেন : তরঙ্গ নিলামের শর্ত ও নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি > ‘বুঝে-শুনে আগে বাড়তে চায় বেসরকারি অপারেটররা

পরের সংবাদ

ওয়েবফিল্ম পর্যালোচনা : চেনা প্রেমের গল্পের অন্য এক প্রতিচ্ছবি ‘টান’

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রেমের জোরালো অনুভূতির গল্প ‘টান’। এখানে নিটোল প্রেম নেই। আছে পোড় খাওয়া এক প্রেম, যেখানে প্রেমিকাকে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
সিনেমার গল্পটি অচেনা নয়। চেনা ছকের ভেতর ভিন্নধর্মী গল্পের ছবি এটি। একটি গল্প দুটি ভাগে সমান্তরালভাবে দেখানো হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারের বাইরে উৎকণ্ঠায় থাকা রাশেদ। এর সূত্র ধরে ফ্ল্যাশব্যাকে অবনি আর বখে যাওয়া নেশাখোর রাশেদের প্রেম-বিয়ের ক্রমিক বিন্যাস।
মোটামুটি একটি গল্প ঠিকই বুনতে পেরেছেন পরিচালক রায়হান রাফি। কিন্তু চিত্রনাট্য খুব একটা আঁটোসাঁটো লাগেনি। একদম প্রথম দৃশ্যে যে রহস্য জিঁইয়ে রেখেছিলেন সেটা পরে মজবুত করতে পারলেন না তিনি। যে জায়গাগুলোতে রহস্যের জাল বিস্তার করা হয়েছে সেখানে কাহিনীর ভবিতব্য সহজেই আন্দাজ করা যাচ্ছিল।
‘টান’-এর আকর্ষণ শবনম বুবলী। বাণিজ্যিক ঘরাণার এই নায়িকা অফট্র্যাকের সিনেমায় কেমন অভিনয় করেন সেটা দেখার ছিল। পরিচালক এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, বুবলীকে আগে কোনো পরিচালক সেভাবে ব্যবহার করতে পারেননি। ‘টান’ দেখার পর দর্শক ধাক্কা খাবেন।
দর্শক হিসেবে ধাক্কা খেয়েছি বটে। এই বুবলীকে আসলেই দর্শক আগে কখনো দেখেননি। হিজাব পরা, পরিশীলিত মেয়ে অবনি যেন পাশের বাড়ির বোনের সংসারে আশ্রিতা মেয়ে। প্রতিটি দৃশ্যে তার অভিনয় অনবদ্য। বিশেষ করে, বাড়িওয়ালাকে বসিয়ে রেখে অবনি যখন টাকা খুঁজে কোথাও পায় না। বুঝে যায়, নেশাখোর স্বামী টাকা চুরি করে নেশা করেছে। চিৎকার করে স্বামীকে কিছু বলতে পারে না, বাইরে বসে থাকা বাড়িওয়ালা শুনে যাওয়ার ভয়ে। মান-সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায় সে।
চাপা চিৎকারে দিশেহারা হয়ে ঘুমের ভান করা স্বামীর কাছে টাকার কথা জানতে চাওয়া। তারপর ফের স্বাভাবিক হয়ে বাড়িওয়ালার সামনে এসে মলিন মুখে এই মুহূর্তে ভাড়া দিতে না পারার অপারগতা প্রকাশ। চরিত্রের এরকম রূপান্তর সত্যিই অসাধারণ। তবে অবনি কৌটায় টাকা রাখলেও বইয়ের পাতার ফাঁকে কেন টাকা খুঁজতে গেল সেটা বোধগম্য হয়নি।
এছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী সংলাপ বলার ধরন ভালো লেগেছে। বোনের প্রতি অবনির যে রাগ আছে তা দেখানোর জন্য বড় কোনো কথা কাটাকাটির প্রয়োজন হয়নি। তার মেপে মেপে কথা বলা সহজেই বুঝিয়ে দেয়, বড় বোনের ওপর সে কতটা রেগে আছে। সিনেমাটি দেখার সময় বারবার মনে হচ্ছিল, অবনি চরিত্রটি আমার খুব পরিচিত। বাস্তাবে কোথায় যেন তাকে দেখেছি।
নেশাগ্রস্ত যুবক রাশেদের চরিত্রে সিয়াম ভালো করেছেন। চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে গেছেন বলব না। তবে খারাপ করেননি। একটি দৃশ্যের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করব, অবনি অফিসে যাওয়ার পর সারাদিন বাসায় একা রাশেদের নেশার টানে ছটফট করার দৃশ্যটি চোখে লেগে আছে।
মৃত্যু পথযাত্রী স্ত্রী অপারেশন থিয়েটারে থাকার পর স্বামীর মধ্যে যে ধরনের উৎকণ্ঠা থাকা দরকার সেটা রাশেদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠেনি। কে জানে, হয়ত সে তখনো নেশাগ্রস্ত ছিল। একই পরিচালকের ‘দহন’ ছবিতেও এ ধরনের একটি চরিত্রে দেখা গেছে সিয়ামকে। তবে সেই ছবির প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন।
সিনেমার ‘টুইস্ট’ হিসেবে সোহেল মণ্ডল ও নীলাঞ্জনা নীলাকে ব্যবহার করা হয়েছে। নিজেদের জায়গায় ঠিকঠাক অভিনয় করেছেন তারা। যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। আলাদা করে বলতে চাই সোহেলের কথা। তিনি এই গল্পের ‘এক্স ফ্যাক্টর’। ছবির গান মানানসই। তবে দৃশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য ছিল না। সম্পাদনা ভালো। লোকেশন চমৎকার। সিনেমাটোগ্রাফি দৃষ্টি কাড়বে। সুতরাং সবশেষে বলা যায়, চেনা প্রেমের গল্পের অন্য এক প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকবে এই ছবি।
:: রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়