তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

সিইসি কে এম নূরুল হুদা : দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কঠিন হলেও এটাই সমাধান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন কঠিন হলেও এটাই একমাত্র সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বন্দুক মাথায় রেখে একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। চিরদিন সেটা হতে পারে না। বর্তমান রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নির্বাচন করা কঠিন। কিন্তু সম্ভব, আর এটাই একমাত্র পথ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি পাঁচ বছর মেয়াদে তার কর্মযজ্ঞও তুলে ধরেন। সিইসি এ সময় ১/১১ সরকারের সময়কার এ টি এম শামসুল হুদা কমিশনের সমালোচনাও করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হয়েছে- এমন অভিযোগের জবাবে সিইসি নুরুল হুদা বলেন, এটা এখন প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু এটা অভিযোগ। অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ, আমি তো দেখিনি। আপনিও দেখেননি যে, রাতে ভোট হয়েছে। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। সারাদেশের নির্বাচনও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। সংসদ নির্বাচনের সময় আদালতে যেতে বলেছিলাম প্রার্থীদের। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলই কেন যায়নি জানি না। কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি সেটা তাদের বিষয়। তবে এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছেন। যেহেতু যাননি, তার অর্থ এটা অভিযোগ।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদা ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, বদিউল আলমকে ড. হুদা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী কাজ দিয়েছিলেন। আর ওই কাজে লাখ লাখ টাকা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা সম্পর্কে তিনি

বলেন, এক সময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার এ কথাগুলো মোটের আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। নির্বাচন কমিশন ইজ ওয়ান অব দ্য মোস্ট কমপ্লিকেটেড ইনস্টিটিউট অ্যানি হয়ার ইন দি ওয়ার্ল্ড। সেখানে একটা লোক সবকিছু করে একেবারে বাহবা নিয়ে যাবে, এটা সম্ভব না।

তার জন্যও সম্ভব না। এখন তিনি নিজে তার অহমিকাবোধ থেকে অথবা তিনি আমিত্ববোধ থেকে অনেক কিছু করতে পারেন। কিন্তু সেটা সম্ভব না।
সাবেক সিইসিকে উদ্দেশ করে সিইসি বলেন, আপনারা ৬৯২ দিন পর নির্বাচন করেছেন। আর আমাদের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়েছে। আপনাদের সংবিধান লঙ্ঘন করার এ অধিকার কে দিয়েছিল? তখন তো ইমার্জেন্সি অবস্থা ছিল। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা আর জরুরি সময়ে সামরিক সরকারের অধীনে নিবার্চনের মধ্যে পার্থক্য আছে। সেজন্য শামসুল হুদা কমিশন প্রশংসা পেয়েছে। তখন যে পরিবেশ পরিস্থিতি ছিল সেটা ছিল একটা জরুরি অবস্থার মধ্যে। ক্যান্টনমেন্টের আশীর্বাদ নিয়ে ওই নির্বাচন করা হয়েছিল। তবে এ অবস্থা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে স¤প্রসারিত করে না।
গণতন্ত্রে উন্মুক্ত পরিবেশ থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে বন্দুকের নল অথবা লাঠি উঁচিয়ে নির্বাচনকে সাইজ করা যায় না। এটার জন্য ছেড়ে দিতে হয় উন্মুক্ত পরিবেশ। সেখানে ভুল-ভ্রান্তি হবে। সেখানে সংঘাত হবে, বিতর্ক হবে। মিছিল হবে, মিটিং হবে- এখন যেমন হয়। এই হলো পরিবেশ। বন্দুক মাথায় রেখে নির্বাচনের অবস্থা একটা হতে পারে, চিরদিনই সেটা হতে পারে না। তার জন্য খুলে দিতে হবে দরজা। এখন সেই দরজা খুলে গেছে। এখন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নির্বাচন হয়, এ নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু সম্ভব, এর মধ্য দিয়েই আমাদের যেতে হবে।
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বিষয়ে সিইসি বলেন, তিনি একজন অসুস্থ ব্যক্তি। তিনি কখনো আইসিইউতে কখনও সিসিইউতে ছিলেন। এছাড়া উনি সিঙ্গাপুর, ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব চিকিৎসার ব্যয় কমিশন থেকে করা হয়। এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। আমি বরাবরই বলেছি, ইসিতে উনি ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়