তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

ভারতীয় গরু-মহিষের জমজমাট ব্যবসা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুল আহসান কল্লোল, নীলফামারী থেকে : নীলফামারীর জলঢাকায় চলছে বিভিন্ন চোরাইপথে আসা অবৈধ ভারতীয় গরু ও মহিষের জমজমাট ব্যবসা। উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুরহাট মীরগঞ্জহাটে সপ্তাহের মঙ্গল ও শনিবার হরিয়ানা প্রজাতির ভারতীয় শতাধিক গরু এবং শতাধিক অসুস্থ মহিষ হাটে নিয়মিত কেনাবেচা হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ সময় ওই সব ভারতীয় পশুর গায়ে একটি বিশেষ সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু ব্যবসায়ীরা এসে এসব ভারতীয় পশু ক্রয় করে ট্রাকে করে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন এলাকায়। হাটে ভারতীয় গরুর দাম কম হওয়ায় এবং চাহিদা বেশি থাকায় দেশি গরু ও খামারিরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের পশুর ন্যায্যমূল্য থেকে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ভারতীয় পশু বাংলাদেশে আমদানি করতে হলে নির্দিষ্ট করিডোরে কাস্টমসের ভ্যাট পরিশোধের রশিদ, ট্যাক্স প্রদানের রশিদ থাকা বাধ্যতামূলক হলেও মীরগঞ্জহাটে আগত ভারতীয় পশুগুলোর মালিকরা তা দেখাতে পারেন না। একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের মাধ্যেমে শুধু সীমান্ত এলাকার একটি হাটের রশিদ দিয়েই স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করে ওই হাটে বিক্রি হচ্ছে এসব ভারতীয় অবৈধ পশু। এতে করে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে এতদিনে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি উপজেলা প্রশাসন।
গত কয়েক দিন থেকে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (অবৈধ ভারতীয় গরু মহিষ বিক্রি বন্ধে নীরব প্রশাসন) লেখালেখি করলে তা ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। পরে নড়েচড়ে বসে জলঢাকা উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকালে মীরগঞ্জহাটে ভারতীয় অবৈধ পশু বিক্রি বন্ধে হাট ইজারাদারকে সতর্ক করেছেন ইউএনও। এ বিষয়ে বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুব হাসান জানান, ওই হাট ইজারাদারকে আইন মেনে হাট চালানোর জন্য সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী হাট থেকে তা মানা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা যায়, নীলফামারীর জলঢাকায় প্রতিনিয়ত অবাধে প্রবেশ করছে ভারতীয় চোরাই গরু। সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা হওয়ায় পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলা ও ডিমলা উপজেলার ছাতনাই কলোনি ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার ভাগবাটোয়ারায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমদানি করা ভারতীয় এই চোরাই গরুর জমজমাট অবৈধ ব্যবসার মূল কেন্দ্র এখন জলঢাকার মীরগঞ্জহাট।
এছাড়া চোরাকারবারি এই সিন্ডিকেটের নির্দিষ্ট কিছু শেডে গরুগুলো জমা করে বেপারিদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের টাকা মাসোয়ারার বিনিময়ে সিন্ডিকেটের ম্যানেজের মাধ্যমে ভারতীয় চোরাই গরুর অবৈধ ব্যবসা দেখেও না দেখার ভান করছে স্থানীয় প্রশাসন। কিংবা দায়সারা জবাব দিচ্ছেন দায়িত্বশীলরা। আর এসব সিন্ডিকেটে সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে স্থানীয় কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি, হাট ইজারাদার, রাজনৈতিক ধান্ধাবাজ নেতাসহ স্থানীয় প্রশাসন। বলাবাহুল্য এই সুযোগে কথিত এই সীমান্তগুলো দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদকদ্রব্যের ব্যাপক আমদানি সহজ হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে যেমন বাড়ছে বিভিন্ন প্রকারের অপরাধ তেমনি অন্যদিকে দেশীয় গরুর খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে দেশীয় গরুর খামারগুলো। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়