তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

প্লাস্টিক বর্জ্যে নান্দনিক ভাস্কর্য : সেন্টমার্টিন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৈকতে পড়ে থাকা বিভিন্ন প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে সামুদ্রিক মাছ কোরাল ও কচ্ছপের ভাস্কর্য তৈরি করেছেন একদল গবেষক। তারা বলছেন, পর্যটকদের সচেতনতার মাধ্যমে সেন্টমার্টিনকে দূষণমুক্ত রাখতে দ্বীপটির পশ্চিম সৈকতের বালুচরে ভাস্কর্য দুটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে কোরালের লেজ, পাখনা ও মাথা তৈরি করা হয়েছে সৈকতে পড়ে থাকা চিপস্-বিস্কুটের মোড়ক দিয়ে। আর মাছের বাকি অংশগুলোতে আঁইশ হিসেবে লাগানো হয়েছে পানির বোতল। পাশেই শোভা পাচ্ছে কচ্ছপ। সেটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে পরিত্যক্ত পানির বোতল আর ছেড়া জাল। সঙ্গে আছে প্লাস্টিক দূষণে ক্ষতির মাত্রাসহ একটি নির্দেশিকাও।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) আর্থিক সহায়তায় সেন্টমার্টিনে একটি গবেষণা করছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, অ্যাকুয়াকালচার, মেরিন সায়েন্স অনুষদ ও চ্যানেল

টোয়েন্টিফোর। এই গবেষণা অংশ হিসেবেই চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সহায়তায় ম্যুরালটি তৈরি করা হয়েছে। গবেষণা দলের প্রধান হিসেবে আছেন মেরিন বায়োলজিস্ট ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব।
এ বিষয়ে কেজিএফের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্যরে কারণে দূষিত হচ্ছে মাছ। যার প্রভাব পড়ছে মানব শরীরেও। একজন মানুষ তার গড় আয়ুষ্কালে কমপক্ষে ১৮ কেজি প্লাস্টিক বিভিন্নভাবে গ্রহণ করেন। তাই গবেষণার পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতেই এ প্রচেষ্টা। তিনি আরো বলেন, সেন্টমান্টিন এমন একটি দ্বীপ যাকে রক্ষা করতে হলে, শুধু গবেষণা করলে হবে না, পর্যটকদের সচেতনতাও করতে হবে। গবেষণা ও পর্যটকদের সচেতনতা এই দুটোর মনিকাঞ্চনের জন্য এই অর্থায়ন। গবেষণা শেষে, সৈকত ও সমুদ্র তলদেশে প্লাস্টিকের ধরন ও পরিমাণ নিরূপণ করে এর থেকে পরিত্রাণে সম্ভাব্য উপায় সংবলিত একটি রূপরেখা ও সুপারিশমালা দেয়া হবে সরকারকে।
দেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে সাগরের বুকে ৮ দশমিক ৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। সমুদ্র সম্পদের টেকসই আহরণের লক্ষ্যে গত ৪ জানুয়ারি বঙ্গোপসাগরের এক হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এ দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া এখানে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, পাঁচ প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাঁদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল এককালে। প্লাস্টিক বর্জ্যসহ পরিবেশগত নানা কারণে এসব প্রজাতির অনেকগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও ধীরে ধীরে এসব জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্ট মার্টিনের ৫৯০ হেক্টর এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করেছিল সরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়