তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

থাই-সৌদির বিরোধ মিটল ৩০ বছর পর : দুর্লভ সেই হীরক খণ্ডটি এখন কার হাতে?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গল্পটির শুরু নীল রঙা দুর্লভ একখণ্ড হীরার টুকরো ঘিরে। আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে সৌদি রাজপুত্রের প্রাসাদ থেকে মহামূল্যবান এই রতœ চুরির জেরে থাইল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক টুটে যায় সৌদি আরবের। দীর্ঘ ৩০ বছর পর বিরোধের অবসান ঘটেছে সম্প্রতি। পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। গত মঙ্গলবার থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার সৌদি আরব সফরকালে দুই দেশের মধ্যে এই কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটে। বিবিসি জানায়, এর ফলে থাই শ্রমিকরা আবারো সৌদি আরবে কাজ করতে যেতে পারবেন। পর্যটন এবং পেট্রোকেমিক্যাল খাতেও দুই দেশের মধ্যে আবার সহযোগিতার সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হবে। সৌদি আরব এয়ার লাইন্স এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, আগামী মে মাস থেকে পুনরায় থাইল্যান্ডে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে তারা।
প্রকাশ, ১৯৮৯ সালে সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ কিং ফাহাদের বড় ছেলে প্রিন্স ফয়সলের প্রাসাদ থেকে দামি দামি রতœ ও গহনা চুরি করে পালিয়ে যান প্রাসাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাই নাগরিক ক্রিয়াঙ্করাই তেকামং। চুরি যাওয়া রতেœর মধ্যে ৫০ ক্যারেট ওজনের নীল রঙের একটি বিরল হীরাও ছিল; যেটি আজ পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। চুরির ওই ঘটনায় সৌদি আরবে কাজ করা প্রায় তিন লাখ থাই শ্রমিক কাজ হারান। সৌদি আরবের সঙ্গে বিরোধের কারণে কোটি কোটি ডলারের বাণিজ্য ক্ষতি হয়ে যায় দেশটির। চুরির এক বছর পর ঘটনা তদন্তে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গিয়ে সৌদি আরবের তিন কূটনীতিক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। ঘটনা তদন্ত করতে যাওয়া এক সৌদি কর্মকর্তাও গুম হয়ে যান। থাইল্যান্ডের দুই ব্যক্তি যারা এই চুরির ঘটনা সম্পর্কে জানতেন তাদেরও রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। এতসব কর্মকাণ্ডে শুধু ক্রিয়াঙ্করাই এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া আর কারো সাজা হয়নি। সৌদি আরবের অভিযোগ, থাই পুলিশ এ ঘটনায় ঠিকঠাক মতো তদন্ত করেনি। বরং জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা চুরি যাওয়া গহনাগুলো জব্দ করেছে এবং সৌদি কূটনীতিকদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘চুপ’ থেকেছে।
ক্রিয়াঙ্করাই যেসব গহনা চুরি করেছিলেন তার কিছু অংশ থাইল্যান্ড পুলিশ পরে সৌদি আরবের কাছে ফিরিয়ে দেয়; যেগুলোর অর্থ মূল্যই ছিল দুই কোটি ডলারের বেশি। কিন্তু সৌদি আরবে নিয়ে পরীক্ষার পর জানা যায়, ফিরিয়ে দেয়া গহনাগুলো সব নকল। চুরি কেলেঙ্কারির পর থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার এবারের সফরই থাইল্যান্ড সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কারো প্রথম সৌদি আরব সফর। এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ বলেন, ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ সালে থাইল্যান্ডে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক ঘটনার জন্য তিনি ‘আন্তরিকভাবে অনুশোচনা’ প্রকাশ করছেন। বিশ্লেষকরা কূটনৈতিক পুনর্মিলনের এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা জানান, ত্রিশ বছর পর থাই শ্রমিকরা ফের সৌদি যেতে

পারবেন। দুই দেশের মধ্যে শত কোটি ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু যেই প্রশ্নটির মীমাংসা এখন অবধি করা গেল না, তা হচ্ছে, যাকে নিয়ে এত তোলপাড়, দুর্লভ সেই নীলরঙা হীরার টুকরোটি এখন কোথায়, কোন দেশে, কার হাতে?

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়