তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি : ছয় মাসের নির্বাসনে যেতে চান তামিম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পরিষ্কার করেছেন বাঁ-হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল খান। আগামী ৬ মাস আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলবেন না বলে জানিয়েছেন তামিম। তিনি আরো জানান, ‘কয়েক দিন ধরে আমার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমার সঙ্গে গত কয়েক দিনে সভাপতি নাজমুল হাসান, জালাল ভাই, কাজী এনাম ভাইদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে অনেক জায়গায় বৈঠক হয়েছে। তারা অবশ্যই চাচ্ছেন যাতে আমি অন্তত বিশ্বকাপ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাই। আমার ব্যাপারটা আলাদা ছিল। সবাই মিলে যেটা ভালো হয় সে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ছয় মাস আমি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে ভাবছি না।’ অবিসংবাদিতভাবে বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল খান। সম্প্রতি তাকে নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুন হাসান পাপনের বক্তব্যের পর থেকেই টি-টোয়েন্টি থেকে তামিমের অবসর নিয়ে ভক্তদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মতবাদ। তবুও তামিমের নিজের ভাষ্যটা কি, সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ক্রিকেট সমর্থকরা। টি-টোয়েন্টি না খেলার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘অনেক ক্রিকেটারই টেস্ট ও ওয়ানডের আগে টি-টোয়েন্টি ছেড়েছেন। বড় বড় ক্রিকেটাররাও এমনটা করেছেন। ওয়ানডে আমাদের সবচেয়ে প্রিয় সংস্করণ, খুব উপভোগ করি এটা। টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা সংস্করণ, যখন থেকে ক্রিকেট ব্যাট ধরা শুরু করেছি তখন দুটি ইচ্ছে ছিল বাংলাদেশের হয়ে খেলব এবং টেস্ট খেলব।’ তামিম ভক্তদের নানা গুঞ্জন যেমন অভিমান করেই টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তামিম। এসব বিষয় সম্পর্কে তামিম স্পষ্ট ভাষায় তার বক্তব্যে বলেন, ‘মান-অভিমান নিয়ে অনেক কথাই হয়। এখানে মান-অভিমানের জায়গা অতটুকু নেই। আমি যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি এটা পুরোপুরি ক্রিকেটীয় চিন্তা-ভাবনা থেকে। এখানে কোনো বিতর্কের জায়গা নেই।’ কয়েক দিন আগেই ক্রিকেটের শর্ট ফরম্যাট থেকে তামিমের সরে যাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছিলেন বিসিবি সভাপতি। মিরপুরে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। বলতে গেলে ওকে বলেছিলামও, তুমি আবার টি-টোয়েন্টিতে ফিরে আস। এটা ছাড়বে কেন?
তুমি আমাদের সেরা ওপেনার। অবশ্যই তোমার থাকা উচিত। টেলিফোনে কথা হয়েছিল। ও আমাকে একটা কথা বলেছে, ‘আপনি আমাকে জোর করবেন না। আপনি বললে তো আমাকে আসতেই হবে। কিন্তু আমি আসলে এই ফরম্যাটে খেলতে চাই না।’ নাজমুল হাসান পাপনের থেকে এই খবর পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন টিম বাংলাদেশের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। সরে যাওয়ার ঘোষণা হওয়ার পরপরই বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেছিলেন, ‘২৪ জানুয়ারি তামিমের সঙ্গে আমাদের লম্বা একটা মিটিং হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি তামিমের পরিকল্পনা নিয়ে বোর্ড সভাপতির সঙ্গে আমাদেরও একটা মিটিং হয়েছে। তামিম তার নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ীই ক্রিকেট ক্যারিয়ারের বাকি সময়টুকু সাজাতে চান, যেখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির জন্য কোনো জায়গা নেই।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘তামিমের পরিকল্পনাটা আমি বলতে পারছি না, আপনারা তামিমের মুখেই শুনতে পারবেন। তবে তার নিজস্ব একটা পরিকল্পনা আছে। সে সেভাবেই এগোতে চাচ্ছে। কাজেই এ বিষয়ে আমরা এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না।’ তামিম ইস্যুতে জালাল ইউনুস আরো বলেছিলেন, ‘অবশ্যই আমরা তো চাই তামিম টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাক। এটা আমি আগেও বলেছি- তামিম, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ ওরা এখনো আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই তামিমের সঙ্গে কথা বলেছি।’ বাংলাদেশের জার্সিতে তামিম সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। গত অক্টোবর-নভেম্বরে হয়ে যাওয়া সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল ঘোষণার আগেও তরুণদের সুযোগ দেয়া এবং প্রস্তুতির ঘাটতিকে কারণ দেখিয়ে বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তামিম। ২০০৭ সালের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর মাসে তামিম ইকবালের অভিষেক ঘটে টেস্ট, ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সাগরপাড়ের এই কৃতী সন্তান মাত্র দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেই যাত্রা শুরু করেছিলেন বিশ্বকাপের। সেই বিশ্বকাপেই খান সাহেব নিজের জাত চেনানো শুরু করেছিলেন। ক্রিকেট বিশ্বকাপের নিজের প্রথম ম্যাচেই অভিজ্ঞ জাহিন খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে সপাটে হাঁকিয়ে বিশ্বকাপের শুভ সূচনা করেন। সেই ম্যাচে ৫৩ বল খেলে অর্ধশত নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন সেইদিন। বর্তমানে তিনি টেস্ট, ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বাংলাদেশি হিসেবে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী খেলোয়াড়। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৩০০০ রান ও ওয়ানডেতে ৫০০০ রানের রেকর্ডধারী এবং ১ম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০০ রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন আমাদের ড্যাশিং ওপেনার। ইতোমধ্যে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে তার ২০০তম একদিনের ক্রিকেট ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন টাইগার ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল খান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়