তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করুন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কোনোভাবেই অর্থ পাচার রোধ করা যাচ্ছে না, তেমনি পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কোনো প্রচেষ্টাও আমরা দেখছি না। এ পর্যন্ত অর্থ পাচার রোধে যত কথা হয়েছে, সে অনুপাতে কি কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? হয়নি। অর্থ পাচার রোধ কঠিন বিষয় নয়। সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সব বিভাগেরই যদি সমতৎপরতা থাকে এটি রোধ করা সম্ভব। সর্বশেষ সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো এবং অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত ৬৯ বাংলাদেশির তথ্য হাইকোর্টে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অর্থ পাচারকারীদের শুধু তালিকা করে কোনোই সুফল মিলবে না, যদি আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা না যায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অর্থ পাচারের পরিমাণ বাড়ছে। গত ছয় বছরে (২০০৯-২০১৫) বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা বা ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার। এই হিসাবে গড়ে প্রতি বছর পাচার হয়েছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। পাচার হওয়া এই অর্থের পরিমাণ একই সঙ্গে আতঙ্ক এবং উদ্বেগের। কারণ যে পরিমাণ টাকা পাচার হয়েছে, তার বড় উৎস দুর্নীতি। দুর্নীতি ছাড়া এ পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হয়নি। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি, কিন্তু সেই উদ্দেশ্য কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি করছে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আলাপ-আলোচনার কথাও শোনা যায় জোরেশোরে। কিন্তু কার্যত সেই উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। মাত্র একবার ২০০৭ সালে আমরা একটি ঘটনায় মাত্র ২১ কোটি টাকা ফেরত আনার কথা জেনেছি। এর পর এ ধরনের উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি বা হলেও তার সফলতার খবর আমরা জানতে পারিনি। আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার আশা করছি। দেশে যে হারে দুর্নীতির বিস্তার ঘটেছে এবং এর মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, তাতে এসব লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উন্নত দেশে পরিণত হতে হলে আবশ্যিকভাবেই কয়েকটি বিষয়ের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। গণতন্ত্র, সুশাসন, ন্যায়বিচার, বৈষম্য হ্রাস এবং বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। দেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, অথচ তা রোধ করা যাচ্ছে না, এটা কোনোভাবে বরদাশত করা যায় না। অর্থ পাচার রোধে অবশ্যই পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়