চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

সুজনের দাবি : ইসি আইন পাসের আগে সব দলের মত নিতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সরকার প্রস্তাবিত ইসি গঠনে আইনটি তাড়াহুড়োর মধ্যে পাস না করে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও জনগণের মতামত নেয়ার দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। গতকাল আয়োজিত এক ওয়েবেনিয়ারে সুজন বক্তারা অনুসন্ধান কমিটির কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে এ কমিটিতে তিনটি বৃৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি রাখার বিধানসহ সার্চ কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত নামগুলো ‘পার্লামেন্টারি হিয়ারিংয়ে’ নিয়ে সব দলের মতামত নেয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে বক্তারা সিইসিসহ অন্য চার ইসির নামের প্রস্তাবিত খসড়ায় ১০ জনের নামের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং যাচাই প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের জন্য গণশুনানির বিধান রাখার কথা বলেন। নাগরিক সংগঠন সুজনের আয়োজনে অধ্যাপক ড. রওনক জাহানের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। অন্যদের মধ্যে ওই গোলটেবিলে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, সুজনের নির্বাহী সদস্য প্রফেসর সিকান্দর খান এবং শফিউদ্দিন আহমেদ, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক আসিফ নজরুল, বিশিষ্ট নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আবদুল আলীম, আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সাল, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার এবং বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, অবিশ্বাসের ভিত্তিতে কোনো আইন করা যায় না। আমাদের প্রস্তাবনা ছিল অনুসন্ধান কমিটিতে সাবেক একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাখা, কারণ তার নির্বাচন পরিচালনা সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে লিখিত অলিখিত যে কোনো অভিযোগ থাকলেই তাকে বিবেচনা থেকে বাদ দিতে হবে।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে দুটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। একটি হচ্ছে তিনি নিরপেক্ষ কিনা। দ্বিতীয়ত, তার ভেতরে আইন প্রয়োগের সক্ষমতা ও সাহস রয়েছে কিনা। নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টারি শুনানির বিষয়টি না থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক স¤পৃক্ততা থাকবে না। সেক্ষেত্রে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রস্তাবিত আইনের মাধ্যমে ২০১৭ সালের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনকে নতুন মোড়কে আনা হয়েছে। কোনো আলাপ-আলোচনা না করে সরকারের অনুগত অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে নুরুল হুদার মতো বিতর্কিত ও অনুগত ব্যক্তিদের দিয়ে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচন করার জন্যই সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এ আইন করা হচ্ছে।
আবদুল আলীম বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু আন্তর্জাতিক নীতিমালা আছে। তার প্রথমটি হচ্ছে রাজনৈতিক ঐকমত্য, অর্থাৎ সব দলকে একমত হতে হবে। স্বচ্ছতা থাকতে হবে। ব্যাপক যাচাই করতে হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় জনগণের আস্থা থাকতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, এই আইনটি হচ্ছে সরকারের ইছাপূরণের আইন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা ছাড়া শুধু কমিশন আইন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
ড. রওনক জাহান বলেন, সবার আলোচনা থেকে বোঝা যায় দুটি বিষয়ে সবাই একমত- কমিশনে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পলিটিক্যাল কনসেনসাস এবং স্বচ্ছতা আনতে হবে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় পলিটিক্যাল কনসেনসাস তৈরি করা কিছুটা দুরূহ হলেও সরকারের সদিচ্ছা থাকলে স্বচ্ছতার দিকটা নিশ্চিত করা সম্ভব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়