চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

মাটির চুলায় রান্না : রূপগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : রূপগঞ্জ উপজেলার যাত্রামুড়া এলাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনাগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগ কার্যালয়ের আওতাধীন রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলা এলাকার তিতাস গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মাঝে মাঝে অল্প গ্যাস সরবরাহ চালু হলেও তা রান্না করার মতো নয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক। বাধ্য হয়ে গ্রাহকরা মাটির চুলায় রান্না করছেন। আবার অনেকে খাবার হোটেলগুলো থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন। এতে করে খাবার হোটেলগুলোতে ভিড় দেখা যাচ্ছে। এছাড়া প্রভাব পড়ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানেও। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চালাতে হচ্ছে। এতে করে শিল্প প্রতিষ্ঠানেও উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে জানান, গত দেড় সপ্তাহ ধরে গ্যাস সংকটে ভুগছেন তারা। রাতে অল্প পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ চালু থাকলেও দিনের বেলায় একেবারেই থাকে না। গ্রাহকদের প্রতি মাসে গ্যাস বিল গুনতে হচ্ছে ঠিকই। গ্যাস বকেয়া পড়লে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে রূপগঞ্জ উপজেলার তিতাস গ্যাসের প্রায় ৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে। গত দেড় সপ্তাহ ধরে রূপসী, বরপা, তারাব, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, শান্তিনগর, কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, মৈকুলী, মুড়াপাড়া, আমলাবোসহ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
এছাড়া আড়াইহাজার উপজেলার বিনাইচর, ছোট বিনাইচর, সদর, শিবপুর, কালীবাড়ী, দুপ্তারা, সত্যবান্দিসহ অন্যান্য এলাকাও গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, এখানে প্রায় ৫ হাজার বৈধ গ্রাহক রয়েছেন। অধিকাংশ এলাকায় কখনো গ্যাসের চুলায় আগুন জ¦লছে, কখনো জ¦লছে না। আবার কখনো জ¦লছে নিভুনিভু করে। এতে গৃহিণীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। রূপগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ নেই বললেই চলে। ভোর হতে না হতেই তিতাস গ্যাসের লুকোচুরি শুরু হয়ে যায়। সারা দিনে গ্যাস নেই বললেই চলে। দিনের বেলা পানি গরম হতেই ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। সন্ধ্যায়ও তেমন একটা থাকে না। মাঝে মাঝে গ্যাস একটু আধটুকু আসে তাও খুব অল্প সময়ে জন্য। তাই বাধ্য হয়ে গৃহিণীদের মাটির তৈরি চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডারে রান্না করতে হচ্ছে। অনেকে আবার রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে আনছেন। গত দেড় সপ্তাহ ধরেই রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলায় তীব্র গ্যাস সংকট চলছে বলে জানান স্থানীয়রা। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনাগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগ সূত্র জানায়, এ কার্যালয়ের আওতায় প্রায় ৩৭ হাজার আবাসিক বৈধ গ্রাহক রয়েছেন। এছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে ৭৫০টি। এর মধ্যে রূপগঞ্জে গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ও আড়াইহাজারে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার।
তিতাস সূত্রে জানা গেছে, তিতাস গ্যাসের টোটাল নেটওয়ার্কে চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই কম হচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু দিন ধরে কাতার থেকে জাহাজে করে লিকুইড এলএমজি এনে চট্টগ্রামে তা রিফাইরিং করে কনভার্টের মাধ্যমে (জাতীয় গ্রিড) ৩২ ইঞ্চি পাইপলাইনে ঢুকানো হচ্ছে। ফলে প্রেসার হাফ ডাউন হচ্ছে। এছাড়া এমনিতে শীতের দিনে পাইপলাইনে গ্যাস জমে যায়। গ্যাস সরবরাহ ধীরগতি থাকে। গ্যাস সংকটের এটাও আরেকটা কারণ। গরম পড়লে আবার ঠিক হয়ে যায়। তিতাস গ্যাসের ওই সূত্রটি আরো জানায়, আশা করা যাচ্ছে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গ্যাস সংকট সমাধান হয়ে যাবে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা জানান, অতি দ্রুত গ্যাস সংকট সমাধান করা না হলে বৃহৎ আন্দোলনের নামবেন তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনাগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মেজবাউর রহমান বলেন, তিতাস গ্যাসের সাপ্লাই কম। এ কারণে গ্যাসের প্রেসার কমে গেছে। তবে এ সমস্যা শিগগিরই দূর হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়