চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

ঘরে ঘরে করোনার হানা : চট্টগ্রামে একদিনে শনাক্ত সংখ্যা ৬ মাসে সর্বোচ্চ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এখন করোনার হানা। কেউ কারো খোঁজখবর নিতে গিয়েই শুনতে পান ঘরের কারো না কারো জ¦র-সর্দি-কাশি-মাথাব্যথাসহ নানা উপসর্গ। আর এ অবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তারা করোনা টেস্টসহ নানা উপদেশ দিচ্ছেন। উদ্বেগজনকহারে বেড়ে চলেছে এ মহামারি। চট্টগ্রামে নতুন বছরের প্রথমদিনে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর গতকাল বুধবারের প্রতিবেদনে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয় ১৪৫৫ জনের। চট্টগ্রামে একদিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা প্রায় ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন দুজন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসের করোনা শনাক্তের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৬ দিনে চট্টগ্রামে ১৪ হাজার ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা প্রতিদিন গড়ে ৫৩৮ জন। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার ২৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে গত মাসে করোনা রোগী শনাক্ত হন ২৩৫ জন, যা গড় হিসাবে প্রতিদিন মাত্র ৮ জন। সার্বিকভাবে গত মাসে করোনা সংক্রমণের হার ছিল এক শতাংশের নিচে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের উদাসীনতা ও অবহেলায় সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোতে এখনো ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। গণপরিবহন, শপিংমল, পর্যটন স্পট কোথাও পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে না।
গতকাল বুধবার জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ১২টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ৪৫৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এর মধ্যে এক হাজার ৬০ জন নগরীর এবং ৩৯৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। একদিনে ১৪৫৫ জন রোগী শনাক্ত হওয়া গত ছয় মাসে রেকর্ড। গত বছরের ৩০ জুলাই সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ১৪৬৬ জন শনাক্ত হয়েছিলেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৫ জন। এর মধ্যে ৮৩ হাজার ৮৪০ জন নগর এবং ৩১ হাজার ৭৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৮। এর মধ্যে ৭২৯ জন নগরের এবং ৬১৯ জন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান বাবুল বলেন, দৈনিক শনাক্তের হার বাড়ছে। এ অবস্থায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। মাস্ক পরার পাশাপাশি আমাদের ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। ওমিক্রমণ খুব বেশি সংক্রামক। তাই অবশ্যই এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে চট্টগ্রামবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো এখন পরিহার করা উচিত।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা না থাকায় করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণের তুলনায় হাসপাতালে রোগীর চাপ না বাড়লেও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা দিয়ে করোনার সংক্রমণ বিচার করা যাবে না। তিনি বলেন, খুব বেশি সংক্রামক হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জনসমাগম, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা জরুরি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। বিধিনিষেধের মধ্যেও মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে মানুষ উদাসীন। মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়