নাসির-তামিমার বিয়েকাণ্ডে মামলা : অভিযোগ গঠনের আদেশ ৯ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

পরের সংবাদ

রাণীনগরে বাণিজিকভাবে মাছ চাষে সফলতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুকুমল কুমার প্রামাণিক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় বাণিজিকভাবে দেশীয় ও বাংলাসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। যা দিন দিন বাড়ছে। মাছ চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে নিত্যনতুন বিভিন্ন প্রযুক্তি। আর উপজেলা মৎস্য অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় লাভের মুখ দেখছেন মাছ চাষিরা। ফলে অধিক মুনাফার আশায় মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারি ও ব্যক্তিগত ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরে মাছ চাষিরা বাণিজিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। উপজেলার পারইল, বড়গাছা, একডালা, কালীগ্রাম ইউনিয়নের মাছ চাষিরা তাদের পুকুরে দেশীয় গুলশা, পাবদা, ট্যাংরা, শিং ও মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। এদিকে সদর, মিরাট, গোনা ও কাশিমপুর ইউনিয়নে কার্প, রুই, কাতলা, মিলেগ, সিলভার, বিকেট, কালিবাউশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন কিছু প্রজাতির প্রায় অধিকাংশ পুকুরে চাষ করছেন চাষিরা।
জানা গেছে, উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে চলতি বছরে ৭ হাজার টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মৎস্য অফিস সূত্র আরো জানায়, প্রতি অর্থবছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার শতাধিক মাছ চাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। আর এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই তারা মাছ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আর্থিকভাবে সফল হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলাজুড়ে ছোট-বড় প্রায় ৩২০০’ মাছ চাষি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার চাষি বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করে আসছেন। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছ চাষ হয় পারইল, বড়গাছা, একডালা, কালীগ্রাম, মিরাট ইউনিয়নে।
এ ব্যাপারে পারইল ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের মাছ চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, আগের তুলনায় মাছ চাষে নতুন নতুন প্রযুক্তি এসেছে। এতে করে চাষিরা অনেক লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে আমি ১০-১২টি পুকুরে মাছ চাষ করছি। এর মধ্যে ৪টি পুকুরে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ। আর অন্য সব পুকুরে বাংলা ছাড়াও অন্যান্য প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছি। আগের তুলনায় মৎস্য অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় বর্তমানে মাছ চাষে সফলতা পেয়েছি।
বড়গাছা গ্রামের মাছ চাষি আহাদ শেখ বাবু জানান, আমি প্রায় ২৫ বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ করে আসছি। বর্তমানে ২৫ বিঘার জলার ৫টি বড় পুকুরে দেশীয় মাছের পাশাপাশি কানচ, পবা, গুলশা, পাঙ্গাশ মাছ চাষ করছি। গত বছর মাছের দাম বাজারে কম হওয়ায় চাষিদের লোকসান গুনতে হয়েছে। বর্তমানে বাজারে মাছের দাম বেশ ভালো আছে। বাজারে এই দাম থাকলে চাষিরা মাছ চাষে লাভবান হবেন বলে মনে করছি।
মিরাট এলাকার মাছ চাষি আবু বক্কর জানান, আমি ৩টি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছি। বর্তমানে আমার পুকুরে বাংলা রুই, মৃগেল, কাতলা, জাপানিসহ তেলাপিয়া মাছ চাষ করছি। আমাদের উপজেলায় উৎপাদিত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারে, সিলেট, বগুড়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় ভোরের কাগজকে বলেন, উপজেলায় কার্প মাছের সঙ্গে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ চাষে চাষিরা উৎসাহিত হচ্ছেন। এলাকায় বিভিন্ন পুকুরে এসব মাছ চাষ করা হচ্ছে। মৎস্য অফিসের সহযোগিতায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার চাষিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এছাড়া বর্তমানে মৎস্য অফিস থেকে চাষিদের পুকুরের পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে চাষিরা সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছেন। আর উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষিদের পুকুরে এয়ারেটর ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ চাষ। আমরা মৎস্য অফিস থেকে মাছ চাষিদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি। চলতি বছরে উপজেলায় ৭ হাজার টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়