নাসির-তামিমার বিয়েকাণ্ডে মামলা : অভিযোগ গঠনের আদেশ ৯ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

পরের সংবাদ

মিতু হত্যা মামলা : বাবার মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় তার বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
একই ঘটনায় দুইটি মামলা চলার বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মোশাররফের মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাবুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের নিজের দায়ের করা মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বাবুল আক্তার বর্তমানে নিজের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
মহানগর পিপি মো. ফরিদউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিতু হত্যায় নিজের দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিনের আবেদন আবারো নাকচ হয়েছে। নিজের করা মামলায় আদালতের নির্দেশেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। আসামি বাবুলের আইনজীবীরা শুনানিতে জামিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। এর ফলে বাবুলকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে। এর আগে তিনি একই ঘটনায় দায়ের হওয়া অপর মামলায় দুই দফা জামিনের আবেদন করে বিফল হন।
মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেয়া হয়েছে জানিয়ে পাঁচলাইশ থানার (জিআরও) এস আই শাহীন ভূঁইয়া বলেন, প্রতিবেদনটি আমরা আগামীকাল (আজ বুধবার) আদালতে জমা দেব। পরে আদালত সেটির ওপর শুনানি শেষে আদেশ দেবেন। তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, মিতু খুনের ঘটনায় দুটি মামলা আছে। এর মধ্যে তার স্বামী বাবুল আক্তার যে মামলাটি করেছেন, সেটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আমরা জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত সেটি গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য বলেছেন। একই ঘটনায় দুই মামলা নিয়ে আদালত পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন। আমরা সেই পর্যবেক্ষণ মেনে দ্বিতীয় মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তবে দ্বিতীয় মামলার ডকেট প্রথম মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করেছি।
গত বছরের ১২ মে পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন মেয়ে হত্যায় জামাতা বাবুল আক্তারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। সেই মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল পিবিআই। এই মামলায় গত বছরের ১৮ আগস্ট ও চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি দুই দফা আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন বাবুল আক্তার। পরে গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় বাবুলের দায়ের করা মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছিলেন। গত ৩০ ডিসেম্বর বাবুলকে তার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনটি করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও কুপিয়ে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির কাছে থাকলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের ওপর। গত বছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ১২ মে ওই মামলার তার বিরুদ্ধে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ ৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ওই দিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পিবিআইয়ের দেয়া চার্জশিটের বিষয়ে বাবুল গত বছর আদালতে আপত্তি জানিয়ে অন্য কোনো সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে মিতু হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্ত চান।
শুনানি শেষে আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে টেকনিক্যাল ত্রæটি আছে উল্লেখ করে অধিকতর তদন্ত করে পুনরায় প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেন। এতে সাবেক এসপি বাবুলের স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল ও শ্বশুরের করা দুটি মামলাই বর্তমানে তদন্ত করছে পিবিআই। গত ২৩ অক্টোবর আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মিতুকে হত্যা করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়