নাসির-তামিমার বিয়েকাণ্ডে মামলা : অভিযোগ গঠনের আদেশ ৯ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

পরের সংবাদ

করোনায় আক্রান্ত রোগীর ৮৫ ভাগই টিকা নেননি : কমছে আইসোলেশনের সময়সীমা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে সংক্রমণ হলে একেক দেশে আইসোলেশনের সময়সীমা একেক রকম। বহু জায়গাতেই এই সময়সীমা কমানো হচ্ছে। আক্রান্তদের কতদিন আইসোলেশনে রাখা হবে তা নিয়ে বাংলাদেশের জনমনেও রয়েছে সংশয়। এই সংশয় দূর করতে শিগগিরই পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে সরকার চাইছে আইসোলেশন পলিসিতে আইসোলেশনে থাকার সময়সীমা কমাতে। সরকার এই সময়সীমা ৫ থেকে ৭ দিন করার বিষয়ে ভাবছে। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ ছাড়া র‌্যাপিড পিসিআর পরীক্ষার অনুমোদন এবং করোনা চিকিৎসায় পুরাতন ট্রিটমেন্ট প্রটোকল কিছুটা সংশোধন করে নতুন করে আরেকটি ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে, জানান মন্ত্রী।
ওমিক্রনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে অনলাইন জুম প্লাটফর্মে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)।
প্রসঙ্গত; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো বলছে, যাদের করোনা উপসর্গ রয়েছে তাদের উচিত ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকা। জার্মানি, জর্ডানের মতো দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে এখনো তার নাগরিকদের ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে বলছে। অবশ্য ফ্রান্স ও জাপানের মতো কিছু দেশ এ সময়সীমা ১০ দিনে সীমিত করেছে। অনেক দেশ তা ৭ দিন এবং সম্প্রতি ইংল্যান্ডে তা নেমে এসেছে ৫ দিনে।
বিপিএমসিএ’র সভাপতি মুবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, বিপিএমসিএ’র মহাসচিব ও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হাসান, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবীর প্রমুখ। সভায় দেশের বিভিন্ন বেসরকারি

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন।
জাহিদ মালেক বলেন, সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখনো কম এবং মৃত্যুও কম। হাসপাতালে যারা আসছেন তাদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ করোনা টিকা নেননি। করোনায় যাদের মৃত্যু হচ্ছে তাদেরও অধিকাংশের টিকা নেয়া ছিল না। যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে খুবই স্বল্পসংখ্যক (মুমূর্ষু) রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। ওমিক্রন মাইল্ড হলেও আক্রান্তের সংখ্যা যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে মৃত্যুও বাড়বে।

এখন পর্যন্ত দেশের ১৪ কোটির মতো মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো আমাদের কাক্সিক্ষত জনগণের আরো ৩ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। এই ৩ কোটি মানুষের অধিকাংশই পরিবহন খাতের, শিল্পকারখানায় কর্মরত সদস্য বা বিভিন্ন দোকান-পাটে কর্মরত কর্মী। এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দ্রুতই আমাদের এই ৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এটি সময়মতো করা গেলে ওমিক্রনের কারণে দেশে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে মানুষের উদাসীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে এখন ওমিক্রন খুব দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না। দেশে সংক্রমণের হার মাত্র ১ ভাগ থেকে বেড়ে ৩২ ভাগ হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ১ থেকে ১৭ জনে উঠেছে। অথচ বাণিজ্যমেলায় দেখা যাচ্ছে মানুষ গাদাগাদি করে চলাফেরা করছে। সেখানে অনেকেই মাস্ক পরছে না। দেশের অন্যান্য জনবহুল স্থানেও একই অবস্থা রয়েছে। সরকার করোনার প্রথম দুটি ঢেউ দেশের মানুষের সহায়তায় সফল হয়েছে। এবারো দেশের মানুষের সহায়তা ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব হবে না। আর এ যাত্রায় সফল হতে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, ওমিক্রন নিয়ে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনা মোকাবিলায় সরকার বিগত দুটি ঢেউ যেভাবে সফল হয়েছে, একইভাবে ৩য় ঢেউ মোকাবিলা করে সরকার সফল হবে।
বিপিএমসিএর সদস্যরা জানান, করোনা সংক্রমণ কমে আসায় অনেক হাসপাতালে করোনা ইউনিটগুলোতে বেড সংখ্যা কমিয়ে ফেলা হলেও জানুয়ারিতে সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ায় পুনরায় করোনা ইউনিটে বেড বাড়ানো হয়েছে। বেড বাড়ানোর সক্ষমতা তাদের আছে এবং প্রয়োজনে তারা তা করবে বলেও জানান। তারা বলেন, দেশে ইতোপূর্বে বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত সরকারের নানারকম উদ্যোগের পাশাপাশি থেকে কাজ করে গেছে। এই কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আর এবারের ওমিক্রন মোকাবিলাতেও তারা সরকারের পাশে থেকে সরকারের সঙ্গেই কাজ করে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়