নাসির-তামিমার বিয়েকাণ্ডে মামলা : অভিযোগ গঠনের আদেশ ৯ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

পরের সংবাদ

আন্দোলনে অর্থ জোগাতেন শাবির প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থী : ঢাকায় আটক করে সিলেটে জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনে উসকানি ও অর্থ সহায়তার অভিযোগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পাঁচ শিক্ষার্থীকে ঢাকা থেকে আটকের পর সিলেটে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। আটককৃতদের পরিবার ও সিলেট মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, শাবিতে আন্দোলনকারীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ায় তাদের আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের আটক করার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অর্থ সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা করা হবে। ঢাকা থেকে তাদের সিলেটের জালালাবাদ থানায় নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে সিআইডি শুধু সহায়তা করেছে। জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, রাতে যে কেউ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারেন। বুধবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
আটক পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান স্বপন, আর্কিটেকচার বিভাগের রেজা নূর মঈন দীপ ও নাজমুস সাকিব দ্বীপ। রেজার স্ত্রী জাকোয়ান সালওয়া তাকরিম বলেন, রেজা সোমবার সন্ধ্যায় উত্তরার বাসা থেকে বেরিয়ে মুদি কেনাকাটার জন্য গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিট তুলে নেয়। তারা রেজার গাড়ি ফেরত দিতে বাসায় আসে এবং জানায় রেজাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যারা বাসায় এসেছিল তাদের গাড়িতে সিআইডির স্টিকার লাগানো ছিল। এ সময় গাড়িতে তিনি হাবিবকে দেখেছেন। রেজার স্ত্রী বলেন, শাবির উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে রেজা ও হাবিব আর্থিক সহায়তা করছেন। আরো অনেক বন্ধুদের কাছে থেকে তারা টাকা সংগ্রহ করেও দিয়েছেন। এ কারণে তাদের আটক করা হতে পারে।
জানা গেছে, সোমবার বিকালে উত্তরা এবং ফার্মগেট এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির টিম তাদের তুলে নিয়ে যায়। আটকদের মধ্যে হাবিবুর রহমান স্বপন বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে পাস করেছেন ২০১২ সালে। একই বছর আর্কিটেকচার বিভাগ থেকে পাস করেছেন রেজা নূর মঈন দীপ এবং নাজমুস সাকিব দ্বীপ। হাবিবুর রহমানের বন্ধু রেজা সিদ্দিকী বলেন, আমি যতটুকু হাবিবের কাছ থেকে শুনেছি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তার কাছে ফোন করে টাকা চেয়েছিল। সে বিকাশের মাধ্যমে ১০০০ টাকা পাঠিয়েছিল। এ ঘটনার জন্য সিআইডি একটি টিম সোমবার বিকালে উত্তরা আগোরার সামনে থেকে হাবিবকে এবং মঈনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। যখন তাদের সিআইডির টিম নিয়ে যাচ্ছে তখন সিআইডি টিমের সঙ্গে আমার কথা হয়। তারা আমাকে একটি কার্ড দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। তারা আমাদের জানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে নাজমুস সাকিবের স্ত্রী নদী জানান, সাকিবের অফিস থেকে জানানো হয়েছিল সিআইডি সদস্যরা তাকে খুঁজছে। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়টি ঠিক নাকি ভুল, আবার কোনো প্রতারণার চক্কর কিনা, সেজন্য আমি আমার স্বামীকে থানায় পাঠাই। পরবর্তীতে জানতে পারি তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সিআইডির একটি টিম তাকে ধরে নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক শিক্ষার্থী তাকে ফোন করে কিছু টাকা সহায়তা চায়। পরবর্তী সময়ে সে বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল। এটাই হয়তো তার অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবশ্য, শাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, আমাদের লেনদেনের সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে এসব করে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়