প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

২৬ জানুয়ারি পেশ হবে সংসদে : ইসি গঠন বিলে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সংসদে উত্থাপিত নির্বাচন কমিশন গঠন আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যোগ্যতা-অযোগ্যতার অংশে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গতকাল সোমবার সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে বিলটি চূড়ান্ত করা হয়। আগামী ২৬ জানুয়ারি বুধবার সংসদ অধিবেশনে এ বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। পরে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হলেও মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৈঠকে বসে তা চূড়ান্ত করে ফেলে কমিটি। তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী চাইলে আগামী ২৬ জানুয়ারি বিলটি পাসও হতে পারে।
শহীদুজ্জামান সরকার এ বিষয়ে ভোরের কাগজকে বলেন, কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করে যোগ্যতা ও অযোগত্যার জায়গায় কিছু পরিবর্তন এনেছে। প্রথমত : সংসদে উত্থাপিত বিলে সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা

বেসরকারি পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
দ্বিতীয়ত : অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না। এখানে দুই বছরের কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু ‘যে কোনো মেয়াদে কারাদণ্ড’ রাখার সুপারিশ করেছে কমিটি। অর্থাৎ, নৈতিকস্খলন বা ফৌজদারি অপরাধে যে কোনো মেয়াদের সাজা হলেই সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগত্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে, জানান শহীদুজ্জামান সরকার।
সংসদে উত্থাপিত বিলের মাধ্যমে আগের সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশনকে ‘বৈধতা’ দেয়া হচ্ছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ইনডেমনিটি বলছে অনেকে। এটা ইনডেমনিটি নয়। বিলের নয় দফায় কিন্তু আগের দুটো সার্চ কমিটির বৈধতা দেয়া হয়েছে। ওই দুই সার্চ কমিটিকে একটা লিগ্যাল সাপোর্ট দেয়া। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতি ঐক্যমতের ভিত্তিতে করেছিলেন। সেটাকে সাপোর্ট দেয়া হলো। কোনো দায়মুক্তি নয়। আর আইনটা কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে। সার্চ কমিটির আইন নয়। তিনি বলেন, আগের দুটো কমিশনের কার্যক্রমকে হেফাজত দেয়ার বিষয় এখানে আসেনি। শুধু সার্চ কমিটির বৈধতা দেয়া হয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং ওই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে এবং ওই বিষয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না।
তবে এ বিষয়ে কমিটির সদস্য বিএনপি এমপি রুমিন ফারহানা বলেছেন, আমি বৈঠকে বলেছি, এটি কোনো বিলই হয়নি। এটা সার্চ কমিটি গঠন ও আগের দুটি কমিশনকে ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দেয়ার জন্য করা হয়েছে। আমি বলেছি, সার্চ কমিটি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে করতে হবে, তার জন্য এ কমিটিতে আওয়ামী লীগের একজন, প্রধান বিরোধী দলের একজন ও দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের একজন সদস্যকে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সার্চ কমিটি যে নাম বাছাই করবে তাদের নামের তালিকা ওয়েব সাইটে দিতে হবে, যেন জনগণ তাদের সম্পর্কে মতামত দিতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি বিলটি নিয়ে এত তাড়াহুড়ো না করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, অংশীজন ও জনগণের মতামত নিয়ে ইসি গঠনে আইন করার দাবি জানিয়েছেন বলে জানান।
যদিও বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানান, বিলে কিছু পরিবর্তন আসছে। তবে বিলটি সার্চ কমিটি গঠনের বিল নয়; এটি ইসি গঠনের বিল, এটিতে কাউকে দায়মুক্ত করা হচ্ছে না, বিগত দুটি কমিশন- যা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সার্চ কমিটির মাধ্যমে করা হয়েছিল তাদের বৈধতা দেয়া হয়েছে মাত্র।
কমিটির অন্য সদস্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দুটো বিষয় বাতিল হয়েছে। আগে নৈতিকস্খলনজনিত অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছরের যে ব্যারিয়ার ছিল সেটা বাতিল হয়েছে। এখন যে কোনো মেয়াদে সাজা হলেই তিনি আর সিইসি বা ইসি হতে পারবেন না। আর হলো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা ও পেশাজীবীদের থেকেও সিইসি বা ইসি নিয়োগ করা যাবে।
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন এবং সার্চ কমিটি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিলটি গত রবিবার সংসদে তোলা হয়। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিদায় লগ্নে আকস্মিকভাবে নতুন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এখন সংসদে বিল পাসের উদ্যোগ নিল সরকারের পক্ষ থেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়