প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

সাড়ে চার বছরের দুর্ভোগ লাঘব : প্রাণ ফিরেছে শেবামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : নিউরো সার্জনের অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (শেবামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগ। প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ এই শিক্ষা এবং চিকিৎসাকেন্দ্রটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে নিউরো সার্জারি বিভাগটি মুখথুবড়ে পড়ে। এমনকি চিকিৎসক না থানায় এ অঞ্চলের রোগীদের চিকিৎসার জন্য যেতে হয়েছে ঢাকায়। আবার সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন অনেক রোগী। গত ১৩ জানুয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অসীত বরণ নাথকে শেবামেকে পদায়ন দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পরে নিউরো সার্জন পাওয়ায় অঘোষিতভাবে বন্ধ থাকা এই বিভাগটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের পাঠদানও। দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালে নিউরো সার্জন পদায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিবের প্রতি কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকসহ সুধীজনরা।
মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের মে মাসে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের নিউরো সার্জারি বিভাগে যোগদান করেন ডা. সরোয়ার মোর্শেদ আলম। এর এক বছর পরেই অর্থাৎ ২০১৭ সালের ২ আগস্ট বরিশাল থেকে বদলি হয়ে যান নিউরো সার্জন ডা. সরোয়ার মোর্শেদ আলম।
এরপর থেকেই শূন্য থেকে যায় শেবামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগের পদ। এমনকি সংকটের কারণে অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসাসেবাও। তবে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পরে হলেও সেই ক্লান্তিকাল কেটেছে শেবাচিম হাসপাতালের। গত ১৩ জানুয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অসীত বরণ নাথকে শেবামেকে পদায়ন দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ডা. অসীত বরণ নাথ প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন। কিন্তু ওই কলেজে নিউরো সার্জারি বিভাগ চালু নেই। নেই অস্ত্রোপচারের পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিও। অনুশীলন না থাকায় কর্মক্ষমতাও হারাচ্ছিলেন ওই চিকিৎসক। তবে পটুয়াখালীতে কর্মস্থল হলেও তিনি বরিশালে এসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলায়।
সম্প্রতি শেবামেক পরিদর্শনে আসেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। উন্মুক্ত আলোচনায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর নিউরো সার্জারি বিভাগ বন্ধ থাকায় দুঃখ প্রকাশ এবং বিভাগটি চালুর দাবি তোলেন শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাশরেফুল ইসলাম সৈকত। তিনি পটুয়াখালীতে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে বরিশালে পদায়নেরও দাবি তোলেন। তার এই দাবির প্রতি মত দিয়ে বিভাগটিতে একজন নিউরো সার্জন পদায়নের দাবি আরো জোরালো করেন মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন।
এ ব্যাপারে ডা. মাশরেফুল ইসলাম সৈকত বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে নিউরো সার্জারি বিভাগ থাকলেও চিকিৎসক থাকবেন না ২০২২ সালে এসে এটা ভাবা যায় না। কেননা, একজন নিউরো সার্জনের গুরুত্ব কতটা সেটা বোঝানো যাবে না। তিনি বলেন, কোনো মানুষ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত বা রক্তক্ষরণ হলে খুব দ্রুতই তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় এই হাসপাতালে সেই ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয় ওই সব রোগীকে।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, একজন নিউরো সার্জনের অভাব ছিল এ হাসপাতালে। আমরা সেই অভাব কিছুটা হলেও দূর করতে পেরেছি। একজন নিউরো সার্জন এ হাসপাতালে পদায়ন করায় এখানকার মুমূর্ষ রোগী সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা পাবেন। এছাড়া নিউরো সার্জারি বিভাগটির আরো যাতে উন্নয়ন করা যায় সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়