প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

বিচারকের মধ্যস্থতা : বাবা-মাকে একসঙ্গে পেল শিশু জান্নাত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : ছোট্ট শিশু জান্নাত মায়ের গর্ভে থাকার সময় পারিবারিক বিরোধে আলাদা থাকতে শুরু করেন নূরজামাল ও আঁখি মণি দম্পতি। ঘটনা গড়ায় মামলা পর্যন্ত। জান্নাত জন্মের পর থেকে মায়ের সান্নিধ্য পেলেও পায়নি বাবার আদর। অবশেষে বিচারকের মধ্যস্থতায় মিটল সেই কলহ। মা-বাবাকে একসঙ্গে পেল ১১ মাস বয়সি ছোট্ট শিশু নূরে জান্নাত। গত রবিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানের খাস কামরায় এই বিরোধের মীমাংসা হয়। বিচারক তার খাস কামরায় দুপক্ষকে ডেকে পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা করে দেন। দুজনের দুটি মামলায় আপসনামা দাখিল করার সিদ্ধান্তও হয়।
এ সময় জান্নাতের মা-বাবা ও স্বজনদের উপস্থিতিতে তৈরি হয় আনন্দঘন মুহূর্তের। বিচারকের আয়োজনে নূরজামাল প্রথমে শিশু জান্নাতকে মিষ্টি মুখ করান। পরে স্ত্রী আঁখি মণিকে মিষ্ট খাওয়ান নূরজামাল। স্ত্রীও তাকে মিষ্টি মুখ করান। পরে একে একে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টি মুখ করানো হয়। শিশুটির জন্য কেনা নতুন পোশাক নিজের হাতে পরিয়ে দেন বিচারক মো. মতিউর রহমান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জান্নাতের বাবা সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. নূরজামাল ইসলাম (২৭) ও মা আঁখি মণির (২৫) বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর। নূরজামাল দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের নুল্লাপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। আঁখি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বড় রাউতা এলাকার রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। বিয়ের পর পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর স্ত্রী আঁখি তার বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর ৮ নভেম্বর নূরজামাল শ্বশুরবাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আসতে চাইলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাক?বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা নূরজামালকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় নূরজামাল ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর শ্বশুরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় আদালতে একটি মারধরের মামলা করেন। সেই মামলা চলাকালে নূরজামাল তার স্ত্রী আঁখি মণিকে বাড়িতে নিয়ে এসে সংসার করছিলেন। এরপর আবারও কলহ হলে আঁখি মণি বাবার বাড়িতে চলে যান। 
২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বামী নূরজামালের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় আদালতে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন আঁখি। স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকতে শুরু করেন। ওই মামলা দায়েরের সময় আঁখি মণি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এরপর বাবার বাড়িতেই তার কন্যা সন্তানটির জন্ম হয়।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতের বেঞ্চ সহকারী আশরাফুল ইসলাম বলেন, নূরজামাল ইসলামের দায়ের করা মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। ১১ মাসের ছোট্ট শিশুকে নিয়ে আদালতে আসা-যাওয়ার বিষয়টি বিচারক মতিউর রহমানকে ভাবনায় ফেলে দেয়। ফুটফুটে শিশুটির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তিনি আপসের উদ্যোগ নেন।
স্ত্রী আঁখি মণি বলেন, বিচারকের উদ্যোগে আমরা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি। আমার ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে আমার আর দুশ্চিন্তা রইল না। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
স্বামী নূরজামাল ইসলাম বলেন, বাবা হিসেবে আমার মেয়েকে ১১ মাস পর কোলে নিতে পেরে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। আমাদের দাম্পত্য জীবন ফিরিয়ে দিতে বিচারকের এই উদ্যোগ আমি সারা জীবন মনে রাখব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়