প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

প্রকল্প উঠবে একনেক বৈঠকে : ১৬ জেলায় হবে ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের ১৬টি জেলায় ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। যেখানে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় শতকরা ২ শতাংশ শস্য নিবিড়তা অর্থাৎ ১৭৬-১৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। এর লক্ষ্য প্রকল্প এলাকার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা এবং কমপক্ষে ১২টি জলবায়ু স্মার্ট প্রযুক্তি স¤প্রসারণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় সেচের পানি ব্যবহার দক্ষতা শতকরা ৫০ শতাংশ সাশ্রয়ী করা। প্রকল্প এলাকায় প্রতি বছর ১২০ টন দানাদার বীজ, ৪০ টন ডাল জাতীয় ফসলের বীজ এবং ৪০ টন তেল জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে।
‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের (সিএসএডব্লিউএমপি) আওতায় এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বাকি ব্যয় সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে।
প্রকল্পটি আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন দিতে পারে বলে জানা গেছে। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২১-২৬ সালের জুন পর্যন্ত। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। নরসিংদী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, ল²ীপুর, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, যশোর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. বেনজীর আলম বলেন, বিশ্বে অন্যতম চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তন কৃষির ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে। এজন্য প্রকল্পের আওতায় জলবায়ুসহিষ্ণু ফসল উৎপাদন করবো। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে কীভাবে প্রতিকূল অবস্থায় কাজ করা যায় সেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অনেক অঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। ফলে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।
এসব নিয়ে রিসার্চ করে লবণসহিষ্ণু ধান উৎপাদন করা হবে। অনেক অঞ্চলে ধান উৎপাদনে বেশি পানি লাগে। এসব এলাকায় কীভাবে কম পানি দিয়ে ধান উৎপাদন করা যায় সেই উদ্যোগও নেয়া হবে। আমরা এসব বিষয়ে প্রকল্পের আওতায় আরো বেশি কাজ করার সুযোগ পাব।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কম্প্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের (সিডিএমপি) প্রথম পর্ব চলাকালীন কৃষিতে ‘বিপর্যয় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা’ কার্যক্রমে এ সেক্টরের দুর্বলতা ও ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ সময় উপজেলায় কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবিকা অভিযোজন (এলএলসিসি) চালু করা হয়। এলসিসি শস্য, শাক-সবজি, উদ্যানতত্ত্ব, সেচ, মিঠা পানির উৎস, জৈব শক্তি, প্রাণিসম্পদ ও বনজ খাতের বিকল্পগুলো চিহ্নিত করা হয়। তবে চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলোর সম্ভব হচ্ছে না।
গ্রামীণ মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে চিহ্নিত অঞ্চলগুলোতে সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের জন্য বিশ্ব ব্যাংক ১২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দিতে সম্মত হয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর এবং মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় পৃথক পৃথক প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার প্রডাকশন উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবে। দেশের মোট ২৭টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ অঞ্চলগুলোতে জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষির তেমন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নত হয়নি এবং এ অঞ্চলের মানুষ ধীরে ধীরে আর্থিকভাবে পিছিয়ে যেতে শুরু করে। তাই এসব অঞ্চলের গ্রামীণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি নেয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় ২১৩ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান, ২৩ হাজার ১২৭টি প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে। এছাড়া ৩ হাজার ১৯২টি কৃষি যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার, মেইজ সেলার মেশিন, বীজের আর্দ্রতা মাপক যন্ত্র, সিড গ্রেডিং চালু, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ডিজিটাল ওয়েট মেশিন, ফিতা পাইপ ও বীজ সংরক্ষণ পাত্র। এছাড়া ২৬৪ নানা বিষয় নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে অন্যতম পলিনেট হাউজ, ড্রিপ ইরিগেশন পদ্ধতি, বারিড পাইপ ইরিগেশন পদ্ধতি, সোলার সিস্টেমে সেচ, কৃষিপণ্য সংগ্রহ সেন্টার ইত্যাদি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়