প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

পি কে হালদার কেলেঙ্কারি : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আলোচিত এনআরবি গেøাবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সংস্থাটির উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানিয়েছে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা হলো- বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির, এ বি এম মোবারক হোসেন, উপপরিচালক মো. হামিদুল আলম ও সহকারী পরিচালক মো. কাদের আলী। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক নোটিসে তাদের তলব করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ফাস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং পিপলস লিজিং থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো মর্টগেজ ছাড়াই লেয়ারিং করে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করেন। এ অপরাধে ইতোমধ্যে দুদক ২২টি মামলা করেছে। তিনি বলেন, ওইসব প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং দুর্বলতা, অডিট প্রতিবেদনে তথ্য গোপন এবং প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কী কী দুর্বলতা ছিল এ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করার জন্য ওই চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যকোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও বক্তব্য নেয়া হবে।
ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগ ওঠার পর এখন পর্যন্ত তিন দফায় ২৩টি মামলা দায়ের করে দুদক। সর্বশেষ পি কে হালদার ও তার ২৯ সহযোগীর বিরুদ্ধে ২৩০ কোটি টাকা লুটপাটে ৭টি মামলা হয় গত নভেম্বরে। আর ৪২৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভুয়া ঋণের নামে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা এবং ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৫টি মামলা করেছিল গত বছরের মার্চ মাসে। যার তদন্ত এখনো চলমান। আর দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতায় এখন পর্যন্ত ৮৩ ব্যক্তির প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ আদালতের মাধ্যমে ফ্রিজ করেছে দুদক। পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে এখন পর্যন্ত ৫২ আসামি ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী প্রায় ২০০ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। যার মধ্যে অন্যতম ছিল পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারি। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারিও করে ইন্টারপোল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন তিনি। পি কে কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পি কে হালদারের সহযোগী শঙ্খ বেপারি, রাশেদুল হক, অবান্তিকা বড়াল ও নাহিদা রুনাইসহ আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়