কাগজ প্রতিবেদক : বিগত তিন দশকের বেশি সময় ধরে অঙ্গীকার অনুযায়ী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখা দল ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ। দেশে তখন জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী স্বৈরাচার। সেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তখন চলছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণআন্দোলন। ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের কজন উচ্ছ¡ল প্রাণবন্ত তরুণ নাটক এবং অভিনয়ের মাধ্যমে সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছিল। তাদের প্রথম নাটক ছিল হালাকু খান। কাজী রফিক রচিত ও নির্দেশিত সেই মঞ্চনাটকে উত্থাপিত হালাকু খান ছিল স্বৈরাচারের প্রতীক। সেই প্রথম মঞ্চ নাটকটি ছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ।
ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ করে- নাটক কেবল বিনোদন মাধ্যম নয়। নাটক আবিষ্কার মানব জীবনের ব্যাপকতা, পরিস্ফূটিত করে সমাজের দর্পণ, উদ্বেলিত করে সব অনিয়মের শেকড়। সর্বোপরি সাহসী উচ্চারণে কাঁপিয়ে তোলে প্রতিক্রিয়াশীল শোষকগোষ্ঠী তথা অশুভ শক্তির ভিত। শোষণ, বঞ্চনা, নিপীড়ন ও না পাওয়ার অতৃপ্ত জ্বালায় গর্জে ওঠা বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। সংস্কৃতি ও রাজনীতির তীব্র আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভবিষ্যতের উজ্জ্বল গৌরবগাঁথায় নাটক রাখবে ইতিবাচক ভূমিকা। এ লক্ষ্য অর্জনে ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ এ পর্যন্ত ২৩টি নাটক প্রযোজনা করেছে। এর মধ্যে ১১টি মঞ্চনাটক এবং ১২টি পথনাটক।
ঢাকা থিয়েটার মঞ্চ পথ চলার ৩৩ বছর উদযাপন করছে আজ মঙ্গলবার। ‘সম্প্রীতির জন্য নাটক’ শিরোনামে দলটি চার দিনের নাট্যমেলার আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। বিকাল সাড়ে ৫টায় উদ্বোধন করবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্যজন দেবপ্রসাদ দেবনাথ, ঝুনা চৌধুরী, কামাল বায়েজিদ, আব্দুল হালিম আজিজ, আখতারুজ্জামান, আহমেদ গিয়াস, চন্দন রেজা।
তিন যুগ পূর্তিতে দলটির পক্ষ থেকে নাট্য সম্মাননা দেয়া হবে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, মামুনুর রশিদ ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুকে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনটি পঁচাত্তরে ঘাতকের হাতে সপরিবার নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।