প্রজ্ঞাপন জারি : সরকারি-বেসরকারি অফিস অর্ধেক জনবলে আজ থেকে

আগের সংবাদ

বৈধ লবিস্টের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবহার : বিএনপি-আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ > ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

অপারেটর দ্ব›েদ্ব ৬৭ একর বোরো নিয়ে শঙ্কায় কৃষক : বদলগাছী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি : জেলার বদলগাছীতে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপে অপারেটর নিয়ে দ্ব›েদ্ব জমিতে ঠিকমতো পানি সেচ না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। জটিলতা নিরসনে অপারেটর পরিবর্তনসহ রাজশাহী বিএমডিএসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় ১৫০ কৃষক অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, কৃষি কাজে চাষাবাদে সেচ সুবিধার জন্য ১৯৯০ সালে বিলাশবাড়ী গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ডিজেলচালিত শ্যালোমেশিন দিয়ে সেচ পাম্প স্থাপন করেন এলাকাবাসী। পরবর্তীতে ওই গ্রামের শিক্ষক লুৎফর রহমানের কিছু পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৯৫ সালে সেখানে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) আওতায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। যেখানে বিলাশবাড়ী গ্রামের কিছু অংশ, হাজিপুর ও কানিপুর গ্রামের প্রায় ২০০ বিঘা জমি ওই নলকূপের সেচের আওতায় আসে। ওই গভীর নলকূপটি গ্রামের আলহাজ আবু হোসেন, আবু বক্কর সিদ্দিকসহ অনেকেই পরিচালনা করতেন।
নলকূপ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা নাহিদা আক্তার সুমি। নলকূপের আওতায় জমি না থাকলেও তিনি ২০১৪ সাল থেকে অপারেটরের দায়িত্ব পালন করছেন। নামে তিনি অপারেটর হলেও সার্বিক দায়িত্ব পালন করতেন শিক্ষক স্বামী শাহীনুর। তৎকালীন সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরীর আত্মীয় হওয়ার সুবাদে তারা অপারেটরের দায়িত্ব পান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রথম বছর তারা ঠিকমতো নলকূপের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তারপর থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত তারা কাগজে কলমে দায়িত্বে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো ধরনের দায়িত্ব পালন করেন না। নলকূপের কোনো ধরনের ত্রæটি হলে ফসল রক্ষার্থে কৃষকদের ঠিক করতে হতো। বছর শেষে বরেন্দ্র থেকে পাওয়া সম্মানির টাকা ভোগ করতেন নাহিদা আক্তার সুমি। বিলাশবাড়ী গ্রামের মধ্যপাড়া ও দক্ষিণপাড়ায় তাদের ব্যক্তিমালিকানা দুটি সেচ পাম্প আছে। যা বরেন্দ্রের নলকূপ থেকে বিঘাপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা সেচমূল্য বেশি। নিজেরা লাভবান হতে ব্যক্তিগত সেচ পাম্প থেকে বরেন্দ্রের নলকূপের জমিতে সেচ দেয়ার পাঁয়তারা করছেন। বর্তমানে কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য নিজ থেকে দায়িত্ব পালন করছেন আবু রায়হান লেমন, রনজু আহমেদ ও সানাউল্লাহ।
বিলাশবাড়ী গ্রামের কৃষক চাঁন, রানা হোসেন ও আবু হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, গত কয়েক বছর থেকে নলকূপের অপারেটর নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। নলকূপের কোনো সমস্যা হলে নিজেদের ঠিক করতে হয়। জমিতে ঠিকমতো সেচ হতো না। আমরা অপারেটর পরিবর্তন চাই। অপারেটর পরিবর্তন না হলে ২০০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে না।
নিজ থেকে নলকূপ পরিচালনাকারীদের মধ্যে একজন আবু রায়হান লেমন বলেন, শিক্ষক শাহিনুরের জমি আমাদের নলকূপের আওতায় নেই। তাদের ব্যক্তিমালিকানা দুটি সেচ পাম্প আছে। আমাদের নলকূপ বন্ধ করে দিয়ে তার ব্যক্তিমালিকানা সেচ পাম্প দিয়ে সেচ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। এতে তারা লাভবান হবে।
নলকূপ পরিচালনা কমিটির সভাপতি শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, নলকূপ পরিচালনা প্রথমদিকে সমস্যা না হলেও বর্তমানে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কৃষকদের জমিতে সেচের প্রয়োজনেই নলকূপ। সবাইকে নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে নাহিদা আক্তার সুমির স্বামী শাহীনুর বলেন, বেশ কয়েক বছর থেকেই স্ত্রী অপারেটরের দায়িত্বে আছে। মহিলা মানুষতো সবসময় সব জায়গায় যেতে পারে না। তবে আমরা দু’জনেই দায়িত্ব পালন করছি।
ইরি-বোরো আবাদের জন্য কয়েক দিন আগে ড্রেন (নালা) পরিষ্কারের জন্য শ্রমিক লাগিয়েছিলাম। একটি পক্ষ শ্রমিকদের উঠিয়ে দিয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি নলকূপ পরিচালনার জন্য স্কুল মাঠে আলোচনার জন্য কৃষকদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে তারা কেউ আসেনি। একটা পক্ষ ঘরোয়াভাবে নলকূপটা পরিচালনা করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আমাদের ব্যক্তিমালিকানা একটি সেচপাম্প আছে যা দিয়ে কিছু জমি সেচ দেয়া হয়।
বদলগাছী উপজেলা বরেন্দ্র বহুমূর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ বলেন, ওই গভীর নলকূপের অপারেটর পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষ থেকে আবেদন এসেছে। সবার সিদ্ধান্তে পরবর্তীতে অপারেটরের দায়িত্ব দেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়