প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী গাড়ি চালালে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। অবাক হলেও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের একটি সড়কে এমন পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছে। ওই সড়কের বাঁপাশে সাইন সিগন্যালে লেখা রয়েছে ‘সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার’। এর কয়েক গজ দূরেই রয়েছে বড় বড় দুটি গতিরোধক। চালকরা বলছেন, পাশে পথনির্দেশক সাইন সিগন্যালের দিকে নজর দিলে নিশ্চিত দুর্ঘটনা।
সুনামগঞ্জের ছোট পৌর শহরের প্রবেশপথ বলা হয় শহীদ আব্দুজ জহুর সেতুকে। এই সেতু পার হয়ে জেলা পরিষদ। পরিষদের পরেই রয়েছে এলজিইডির অফিস। এরপর ২৮ বিজিবির অফিস। পাশাপাশি এই ৩ অফিসের মাঝেই কিছু দিন আগে নির্দিষ্ট দূরত্বে দেয়া হয়েছে দুটি বড় বড় গতিরোধক।
একই জায়গায় সড়ক বিভাগের আগে থেকেই ৩টি সাইন সিগন্যাল রয়েছে। প্রথমটিতে ‘সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার’, দ্বিতীয়টিতে ‘ওভারটেকিং নিষেধ’ ও তৃতীয়টিতে ‘বামে সংযোগ সড়ক’ লেখা। এই জায়গায় কয়েক দিন আগেই দুটি গতিরোধক বানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, গতিরোধক দেয়ার সময় এই সাইন সিগন্যালগুলো দেখেনি তারা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহরের সবচেয়ে প্রশস্ত ও ভালো সড়ক এটি। তাই যানবাহনের একটু বেশি গতি সড়কের এই অংশে। তবে বড় বড় গতিরোধক দিলেও পাশের সাইন সিগন্যাল দেখে অনেক চালকই নির্দিষ্ট গতিতে গাড়ি চালান। এতে হঠাৎ গতিরোধক দেখে ব্রেক কষেও বড় ঝাঁকুনি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না চালকরা। শহরের অন্যান্য সড়কে এ রকম গতিরোধকের উপরে সাদা রং দেয়া হলেও এখানে কিছুই দেয়া হয়নি। ফলে বিটুমিনের সড়কে গতিরোধকের উপস্থিতি দূর থেকে দেখা যায় না।
এছাড়া জেলা পরিষদ থেকে বিজিবি অফিস পর্যন্ত কোনো সড়কবাতি নেই। ফলে রাতে অন্ধকার হয়ে থাকে সড়কের এই অংশ। এতে ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে, বলছেন চালকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোথাও গতিরোধক দিলে এর আগে সাইন সিগন্যাল দিয়ে চালকদের সতর্ক করা হয়। এছাড়া চালকরা যাতে স্পষ্ট গতিরোধক দেখতে পান সে জন্য সাদা রং দিয়ে চিহ্ন দেয়া হয় উপরে। কিন্তু এখানে কিছুই নেই। গতিরোধকের আগে যে জায়গায় ‘সামনে গতিরোধক’ লেখা থাকার কথা সেখানে রয়েছে ‘সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার’। এতে দুর্ঘটনা কমার চেয়ে বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গাড়িচালক মো. আবু তাহের মিয়া বললেন, স্থানীয় চালকদের কয়েক দিন সমস্যা হয়েছে। এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তবে নতুন কেউ এলে বিপদে পড়তে পারেন।
চালক আলী আহমদ ও মিরাজুল ইসলামও জানালেন একই কথা। বললেন, নিয়ম হচ্ছে গতিরোধকের উপরে সাদা রং লাগানো হবে। এর আগে সাইন সিগন্যালের মাধ্যমে চালকদের সতর্ক করা হবে ‘সামনে গতিরোধক রয়েছে’ লিখে। এখানে রয়েছে উল্টো। সাইন সিগন্যাল ঠিকই রয়েছে। সেখানে লেখা ‘সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার’। এই লেখা দেখে কোনো চালক গাড়ি টানলে নিশ্চিত দুর্ঘটনায় পড়বেন।
নিরাপদ সড়ক চাই সুনামগঞ্জ কমিটির সভাপতি মহিম তালুকদার বলেন, এখানে গতিরোধক দেয়া হয়েছে। গতিরোধকের উপরে ও পাশে কোনো চিহ্ন দেয়া হয়নি। এতে কয়েক দিনের ভেতরে কয়েকটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় গতিরোধক দেয়ার কথা বলি। তখন তারা বলেন, মহাসড়কে গতিরোধক দেয়ার নিয়ম নেই। এখন দুটি বড় গতিরোধক কোন নিয়মে দিল আমরা বুঝি না।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তাই দুটি গতিরোধক দিয়েছি। তবে এটি এত বড় নয়।
৬০ কিলোমিটার গতির সাইন সিগন্যাল সম্পর্কে জানতে চাইলে জানালেন, তিনি নতুন এসেছেন। এই সাইন সিগন্যাল তিনি দেখেননি। এখন এটি সরানো হবে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।