নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আবু বকর সিদ্দিক, নওগাঁ থেকে : কনকনে ঠাণ্ডা। এর সঙ্গে বইছে হিম বাতাস। গতকাল রবিবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তারপর সূর্যের দেখাও মিলেনি। এমন আবহাওয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁর মানুষ। ঠাণ্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয় ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঠাণ্ডাজনিত রোগে চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে ঠাণ্ডাজনিত রোগে ৩ হাজার ৭৯৬ জন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৪০ জন এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত এক সপ্তাহে (গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি) নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩২০ এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৫ জন। এদের বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রচণ্ড শীতের কারণে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে ২৩৫ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ১২২ জন শিশু। এছাড়া নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন শিশু। রবিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪০ শিশু, ২০ জন পূর্ণবয়স্ক ও ১৮ জন বৃদ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারহানা আক্তার বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সাথে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় অনেক শিশুকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এমনকি এক বেডে ২-৩ জনকে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ৪০টি বেডের বিপরীতে ৬১ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তাদের সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
প্রচণ্ড শীতের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে জানিয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। এছাড়া স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধের সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে আমরা চিকিৎসাকর্মীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, শিশুদের যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাত-পায়ে মোজা পরাতে হবে। আবার ঘামে কিনা সেদিকেও নজর রাখতে হবে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। নওগাঁয় গত কয়েক দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এরপর রবিবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উত্তরের হিম বাতাসের কারণে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যা নামার পর থেকে ঘনকুয়াশায় চারদিকে ছেয়ে যায়। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। দিনমজুররা শীতে মাঠে কাজ করতে পারছেন না। একদিকে গরম কাপড়ের অভাব, অন্য কাজে বের হতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে লোকজনের ভিড় বাড়ছে। ফুটপাতেও গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে সমানতালে।
বদলগাছী আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকাল ৮টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বিকাল ৪টায় ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সোমবার তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়