নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ৩ : অর্থ হাতিয়ে নিতেই নির্যাতন রূপান্তরকামী নারীকে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রূপান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার) নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তাররা হলেন- ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদ (২১), সাইমা শিকদার নীরা ওরফে আরজে নীরা (২৩) ও আব্দুল্লাহ আফিফ সাদমান ওরফে রিশু (১৯)। র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২ এর যৌথ অভিযানে গত শনিবার রাত ও গতকাল রবিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল বিকালে কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলবে না এমন ব্যক্তিদেরই প্রতারণার জন্য টার্গেট করে থাকে গ্রেপ্তাররা। সামাজিকসহ নানা মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেয় তারা। ট্রান্সজেন্ডার নারী বিউটি ভøগার সাদ বিন রাবী ওরফে সাদ মুআর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেই তাকে টার্গেট করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে ফাঁদে ফেলে ১ লাখ টাকা দাবি করাসহ মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ওই বিউটি ভøগার ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে। তিনি দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে স্ব-উদ্যোগে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সচেষ্ট হন। ঘটনার পর ভুক্তভোগী গত শুক্রবার ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২ এর যৌথ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে ভুক্তভোগীর ছিনিয়ে নেয়া আইফোন উদ্ধারসহ জব্দ করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পিস্তল, মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা ঘটনার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দেয় র‌্যাবকে। তাদের

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। ইশতিয়াক চক্রের হোতা ও আরজে নীরা এবং সাদমান আফিফ ওরফে রিশু তার অন্যতম সহযোগী। তারা গত প্রায় দুই বছর ধরে নানাবিধ কৌশলে জিম্মি ও প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারী-পুরুষদের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। তারা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। তারপর কৌশলে বিভিন্ন সময়ের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীকে হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেইল করে। অপকর্মের জন্য তাদের ভাড়া করা বাসা ব্যবহার করে থাকে। যেখানে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিওগুলো ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। এছাড়া অনলাইনেও ফাঁদে ফেলা হয়।
তিনি বলেন, অপকর্ম করার ক্ষেত্রে তারা নিজেদের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিল। ট্রান্সজেন্ডার নারীকে হেনস্তা ও নির্যাতন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিশুর সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে ১০ জানুয়ারি ভাটারা বসুন্ধরা এলাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রেস্টুরেন্টে ভুক্তভোগীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রিশু। সেখান থেকে সারপ্রাইজ দেয়ার কথা বলে কৌশলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইশতিয়াকের ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায়। সেখানেই তিনজন মিলে ভুক্তভোগীকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে।
র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার ইশতিয়াকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন মামলায় তিনি কারাভোগ করেছেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়