নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

বিএবি ও এবিবির প্রতিক্রিয়া : বেতন বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন অবাস্তব, সংবিধান লঙ্ঘন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বেসরকারি ব্যাংকে কর্মী নিয়োগে সর্বনি¤œ বেতন নির্ধারণ করে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে তা অবাস্তব ও অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এটি সরকারি বেতন কাঠামোর সঙ্গে ব্যাপকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যাংকগুলো নতুন শাখা খোলা দূরের কথা বিদ্যমান অনেক শাখা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। দেশে সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতের ব্যাংক রয়েছে। অথচ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। আইন সবার জন্য না করে একটি খাতের জন্য করা হয়েছে। এটি সংবিধানের লঙ্ঘন বলে মনে করে বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে সরকারের গ্রামকে শহরায়ন, গ্রামে বসেই চাকরি, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। বিনিয়োগবান্ধব ঋণের সুদহার আবার বাড়িয়ে দেবে। তাই প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়েছে ব্যাংকের মালিকদের সংগঠন ব্যাংকস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) এবং এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বৃহস্পতিবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশকালে সর্বনি¤œ বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা আর শিক্ষানবিশকাল শেষ হলে বেতন হবে ৩৯ হাজার টাকা। নিরাপত্তাপ্রহরী, অফিস সহকারী, গাড়িচালক ইত্যাদি সাপোর্ট স্টাফদের নিয়োগে সর্বনি¤œ বেতন হবে ২৪ হাজার টাকা। ব্যাংকগুলো এখন ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন নতুন শাখা খুলছে। কম খরচে গ্রামের মানুষকে সেবা দিতে উপশাখা খুলছে। ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি ও অন্যান্য বেসরকারি খাতের কর্মীদের বেতনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বনি¤œ বেতন অনেক বেশি। উপজেলা পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি সংস্থার পিয়ন, পুলিশ কনস্টেবল, বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিয়োগের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা না করে অযৌক্তিকভাবে ব্যাংকের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্রামের ব্যাংকিং ব্যবসার পরিধি অনেক কম। তাই সেখানে এত বেশি বেতন দিয়ে কর্মী নিয়োগ করে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত পরিপালন করতে হলে অবশ্যই গ্রামের শাখা বন্ধ করতে হবে। এতে গ্রামীণ উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে।
সূত্র জানায়, করোনাকালে গত দুই বছর সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব খাতেই নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো শাখা বিস্তারে নতুন নতুন কর্মী নিয়োগ করেছে। এ নতুন কর্মী নিয়োগ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের সন্তান ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দিতে বাধ্য করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সন্তান-আত্মীয়স্বজনদের অধিকাংশেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক কম। এখন নিজেদের সন্তান ও আত্মীয়স্বজনদের স্থায়ীভাবে ভালো অবস্থানে নিতে ব্যক্তিস্বার্থে এমন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নীতি পরিপালনে সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বেসরকারি ব্যাংক। এছাড়া সরকার ঋণের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ কার্যকরের জন্য নিয়ম জারি করেছে। বেতন বৃদ্ধির ফলে ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। ফলে ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর করা সম্ভব হবে না।
ব্যাংকারদের দাবি, নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের আগে ব্যাংকের আয় বাড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। এজন্য বিভিন্ন সেবার মাসুল (সার্ভিস চার্জ), সরকারি সেবার বিপরীতে প্রদত্ত কমিশন, ঋণের সুদহার বাড়াতে হবে। অন্যদিকে প্রভিশন ও করপোরেট কর কমাতে হবে। আনুপাতিকহারে সরকারি সংস্থার স্থায়ী আমানত সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেতন নির্ধারণ নিয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের আরএমজি সেক্টরে বেতন নির্ধারণ করা হয় তিন পক্ষ মিলে, সেখানে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধি থাকে। এখানে আলোচনা না করেই বেতন চাপিয়ে দেয়া ঠিক হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়