নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

বিএনপির আপত্তির জবাবে আইনমন্ত্রী : ভোট চুরি করতে পারবে না বলেই গাত্রদাহ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের আইনটি চলমান সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আইনটি উত্থাপনের পরে বিএনপির হারুনুর রশীদ এর তীব্র বিরোধিতা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। পরে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের এমপি রুমিন ফারহানাও ইসি গঠনের আইনের সমালোচনা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
প্রত্যুত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, আসলে কোথায় ধাক্কা লেগেছে জানেন মাননীয় স্পিকার? এভাবে যদি নির্বাচন কমিশন গঠন হয় আর সেই নির্বাচন কমিশন গঠন করার পর উনারা (বিএনপি) আর ভোট চুরি করতে পারবেন না। এতেই উনাদের গাত্রদাহ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, ভুটান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, ইংল্যান্ড- প্রতিটি রাষ্ট্রে এ রকম স্বচ্ছভাবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের ব্যাপার নেই। জার্মানিতে অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগ দেয়, অস্ট্রেলিয়ায় গভর্নর জেনারেল নিয়োগ দেয়, নিউজিল্যান্ডেও তাই করে। সংসদীয় গণতন্ত্র যেখানে চলে, সেখানে যেভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত হন বা নির্বাচন কমিশনার মনোনীত হয় সেভাবে করার জন্য এ আইন করেছি।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটির সিদ্ধান্ত কখন নেয়া হয়? প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান যখন সংলাপের আয়োজন করেন, সংলাপে দাওয়াত দেন। তখন সবাই মিলে সংলাপে যান। তখন একটা জনমত হয়েছিল, একটা সার্চ কমিটি হবে এবং কমিটি হয়ে সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের জন্য ১০ জনের নাম এ সার্চ কমিটি প্রস্তাব করবে। রাষ্ট্রপতি ১০ জনের মধ্যে থেকে ৫ জন দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এভাবেই সার্চ কমিটি আসে। এটা আইন ছিল না। সেই সার্চ কমিটির মাধ্যমে যখন নির্বাচন কমিশনার হলো এবং দুইটা নির্বাচন হলো তখন উনাদের আপত্তি ছিল না।
আইনমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, যদি কোনো নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের কোনো সদস্য অন্যায় করেন, তাহলে কি প্রস্তাবিত আইনের ৯ দফায় ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে? এটা কি তাই বোঝায়? এটা তা না। যেই দুবার সার্চ কমিটির মাধ্যমে করেছেন সেটাও আইনসিদ্ধ ছিল, সেটাও আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের কথা হচ্ছে, যা-ই করেন তালগাছ আমার। তালগাছ উনাদের না, জনগণের। এখানে যা বলছেন উনারা বুঝে বলছেন না।
তিনি বলেন, উনারা মনে করেছিলেন এটা রাজনৈতিক ইস্যু। যখন আইনটা করে ফেলেছি পালের হাওয়া চলে গেছে। এখন কী বলবেন? এখন এটা নেই, ওটা আছে- এসব নাচ-গান শুরু করে দিয়েছেন। এ আইনটা সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দেয়া হয় সেই ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে এবং সেই ক্ষমতার প্যারামিটার অনুযায়ী করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, ওনারা (বিএনপি) তো অনেক রকম আন্দোলন করেছেন। অমুকের শরীর খারাপ বিদেশ পাঠানোর আন্দোলন, অমুকের এটা তমুকের এটা। এসব করে আন্দোলনের পালে তো হাওয়া লাগেনি। এখন এটা নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করছেন, এটাও হবে না।
উত্থাপিত আইনের ব্যাখা করে মন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে একজন সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে পারবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধে দুই বছর বা তার বেশি দণ্ডিত হন। কিন্তু ৫ বছর পার হয়ে গেলে সেটা আর থাকে না। নির্বাচন কমিশনারের ব্যাপারে সেটাও রাখিনি। দুই বছরের বেশি যদি কেউ দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি কখনই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনার হতে পারবেন না। সংবিধানে যেসব অযোগ্যতার কথা লেখা আছে, সেই অযোগ্যতাই এ আইনে আনা হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, উনারা এক গান গাচ্ছেন। আমি সার্চ কমিটির আইন করছি। এখানে সার্চ কমিটির আইন কোথায় হলো? তারা আর কী চান? ওনারা চান ওনাদের পকেটে যে নাম আছে, সেই নাম দিয়ে দিতে হবে। এটা হবে না। এটা বাংলাদেশ। এটা জনগণ ঠিক করবে। এখানে জনগণ প্রাধান্য পাবে, কোনো দল না।
বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যাখা চেয়েছেন আমি যখন ব্যাখা দিচ্ছি, তিনি কথা বললে শিখবেনটা কী? বুঝবেন না তো, শিখবেন কী? আইনে যে চারজন সার্চ কমিটিতে রাখার কথা বলা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই সাংবিধানিক পদের অধিকারী। রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলেই তাদের চাকরিচ্যুত করতে পারবেন না। সেজন্য এ চারজনকে দেয়া হয়েছে। এ চারজন যেটা করবেন, তাতে রাষ্ট্রপতি যদি পছন্দ না-ও করেন, ওনারা যে ১০ জনের নাম দেবেন তার মধ্যেই থাকতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। ?শুধু তাই না অনুসন্ধান কমিটিতে তিনজন উপস্থিত হলেই কোরাম হবে, এটাও রাখা হয়েছে। তাদের স্বাধীনতা এত বেশি যে তাদের পদ থেকে সরানো ছাড়া রাষ্ট্রপতি কিছু করতে পারবেন না।
বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আগের নির্বাচন কমিশনারের বিচার দাবি করায় তার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (হারুন) বলেছেন নির্বাচন কমিশনারদের বিচার করতে হবে। আগে উনাদের আজিজ সাহেবের বিচার করতে হবে। আগে ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার যারা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। তারপর এখানে আসতে হবে। এত তাড়াতাড়ি তিন তলায় ওঠা যায় না, সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, কিছু দিন আগে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই আইনের জন্য একটি খসড়া আমার কাছে দিয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম কোভিডের কারণে হয়তো এটি না-ও করা যেতে পারে। তখন উনারা বলেছিলেন, অধ্যাদেশ করে হলেও করতে হবে। আমি বলেছিলাম এই আইন সংসদে না এনে করা ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে তার পরে করা উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়