নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে রড মিস্ত্রির মৃত্যু

আগের সংবাদ

ওমিক্রনে ঝুঁকি বাড়ছে শিশুদের : রোগী বেড়েছে ৫ থেকে ৬ গুণ, উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা

পরের সংবাদ

পঞ্চগড়ে শীতের সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত কয়েক দিন ধরে বেড়েই চলেছে শীতের প্রকোপ। সুদূর সাইবেরয়িা থেকে বয়ে আসা হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে জেলার ওপর দিয়ে প্রায় প্রতিদিনিই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে দিন দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত নানা রোগ। জ¦র, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। তবে সবচেয়ে বেশি রোগী পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
হাসপাতালে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের রোগীর চাপে হাসপাতালে তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেই। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে শয্যা না পাওয়ায় বারান্দা এবং মেঝেতেই চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন অনেকেই। শিশুদের সঙ্গে বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হচ্ছেন ঠাণ্ডাজনিত রোগে। শিশুদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা মায়েদের টিকেট বিভাগে দেখা গেছে লম্বা লাইন। অনেকেই বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। তবে বেশির ভাগ শিশুকেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে। ১০০ শয্যার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশু শয্যা রয়েছে মাত্র ১৬টি। কিন্তু ১৬ জনের বিপরীতে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগ থেকে আড়াই শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালে মাত্র একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। এতে রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেকে এখানে কাক্সিক্ষত চিকিৎসা না পেয়ে পার্শ^বর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশুশয্যা মাত্র ১৬টি। তা বাড়িয়ে ২৩টির মতো করা হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত অর্ধশতাধিক শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসক সংকট থাকলেও হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ মজুত রয়েছে। জেলা শহরের এই হাসপাতালে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেয়া খুব কঠিন। বর্তমানে আবাসিক মেডিকেল অফিসাররা সবাই মিলে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন।
সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মীরগড় থেকে আসা নিপা আক্তার বলেন, আমার ছেলের পাতলা পায়খানা কোনোভাবেই কমছে না। হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এখানে প্রচুর রোগীর চাপ তাই মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় শীতপ্রবণ জেলা হওয়ায় প্রতি বছর শীত মৌসুমে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর চাপ বাড়ে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর শিশু রোগী বেশি। বেশির ভাগ শিশু রোগী প্রচণ্ড জ¦র, সর্দি নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। সহজেই শিশুদের শরীর থেকে জ¦র নামছে না। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ হাসপাতালে মজুত রয়েছে। এজন্য শিশু রোগীদের সাপোর্ট দেয়া যাচ্ছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, শীতজনিত রোগ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। এছাড়া বয়স্করাও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। বর্তমানে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে চিকিৎসাসেবা চলমান রয়েছে। আমরা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়