প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কামরুল আহসান কল্লোল, নীলফামারী থেকে : নীলফামারীতে কিছু অসাধু বেকারি মালিক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করছেন। যা ভোক্তাদের জন্য বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) কাছ থেকে তাদের ইউনিট পরিচালনার আইনগত অনুমোদন নেই। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ ও ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড রোধে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও নীলফামারী জেলায় প্রায় শতাধিক বেকারি ও কারখানা বন্ধ রয়েছে।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাঁচামালের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে কৃত্রিম লিচি, আমের জুস ও লাচ্ছির মতো শিশুদের খাদ্যসামগ্রী পাউরুটি, বিস্কুট, কেক তৈরি করছে। খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা অনেক বেকারি ও কারখানার মালিকরা অনুমোদন ছাড়াই এ ধরনের ফুড আইটেম তৈরি করে অবাধে বাজারজাত করছে।
স¤প্রতি সৈয়দপুর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও সদর উপজেলার কয়েকটি বেকারি ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ বেকারির শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হ্যান্ড গøাভস ছাড়া কাঁচামাল মিশিয়ে খাদ্যপণ্য তৈরি করছে। তারা দেখাতে পারেননি বিএসটিআই অনুমোদন এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট। অন্যদিকে শিশুরা এসব বেকারি ও কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে।
এছাড়াও শ্রমিক ও পাইকারি বিক্রেতারা স্যান্ডেল জুতা পরে খাদ্য উৎপাদনকারী ঘরে অবাধে চলাচল করছে। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার সময়েও এসব বেকারির শ্রমিক ফেস মাস্ক ছাড়াই কাজ করছিলেন অবাধে। যেখানে শ্রমিকরা নতুন উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী প্যাকেজিংয়ের জন্য মেঝেতে স্তূপ করে রাখছিল সেই জায়গাটিও স্বাস্থ্য সম্মত নয়।
বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ বলেন, অনেক বেকারি আর কারখানাগুলো কৃত্রিম শিশু খাদ্যসামগ্রী তৈরি করছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন ছাড়াই। তারা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে তৈরি করছে লিচু আমের জুস ও লাচ্ছি। ফলে শিশুসহ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ায় দিন দিন বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশন নীলফামারীর সাধারণ সম্পাদক সুভাষ রায় বলেন, ‘সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ও টুপামারী ইউনিয়নে প্রায় ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা অবাধে উৎপাদন ও বিপণন চালিয়ে যাচ্ছে। এসব বেকারি বা কারখানা অস্বাস্থ্যকর কাঁচামাল দিয়ে খাদ্যসামগ্রী তৈরি করে ব্যবসায়ীরা অবাধে স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে বিক্রি করছে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা প্রায়ই পেটের পীড়ায় ভুগে।
সদর উপজেলার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. দুলাল হোসেন বলেন, স¤প্রতি জেলা সদরের পলাশবাড়ীতে মান্না বেকারিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, নীলফামারী জেলায় প্রায় শতাধিক বেকারিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনের অভিযোগে গত সপ্তাহে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে নীলফামারী সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক বেকারিকে জরিমানা করা হয়েছে। বিএসটিআইর অনুমোদন নেই এমন বেকারির বিরুদ্ধে যথাযথ মনিটরিং করে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।