বিজিবির অভিযান : কক্সবাজারে উদ্ধার ৩০ কোটি টাকার আইস

আগের সংবাদ

আলোচনার কেন্দ্রে ইসি আইন

পরের সংবাদ

জাল ব্যাংক চালানে জামিন লাভ : সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, কাগজ প্রতিবেদক, জয়পুরহাট : আদালতের পৃথক মামলার রায়ে ৫৮ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের ২৯ লাখ টাকা জমা না দিয়ে সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ব্যাংক চালান জমা দিয়ে কারাগারে থাকা একাধিক আসামির জামিন নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানাজানির পর পৃথকভাবে আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত বুধবার দুইজন আসামির জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন। জয়পুরহাটের দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে দায়ের করা এনআই অ্যাক্টের (চেক ডিজঅনার) মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন আবেদনে জালিয়াতির এ ঘটনা ঘটেছে।
জাল ব্যাংক চালান জমা দেয়ার অভিযোগে জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আনিছুর রহমান তিনজনকে আসামি করে গত বুধবার রাতে জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি কালাই সদরের আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে। করিম জামিনপ্রাপ্ত আসামি সোহেল রানার বড় ভাই। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সোহেল রানার বোন জয়পুরহাট পৌরসভার সবুজনগর মহল্লার পারুল বেগম এবং অজ্ঞাত ঠিকানার আলম বাবু ওরফে নসু বাবু ওরফে মুরাদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাঁচুরচক ফকিরপাড়া মহল্লার আসামি সোহেল রানার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার চেক ডিজ-অনারের অভিযোগে এনআই অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়। মামলার বাদী একই উপজেলার হিচমী বাজারের বিজলি ফিড মিলের মালিক মো. আমানুল্লাহ। মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে দ্বিতীয় আদালতের যুগ্ম দায়রা জজ কামরুল হাসান এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় পলাতক আসামি সোহেল রানাকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। পরবর্তী সময় গত বছরের ৬ জুলাই জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশ আসামি সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। এরপর আসামিপক্ষে আইনজীবী নিযুক্ত হয়ে আনিছুর রহমান আসামিপক্ষের সরবরাহ করা জয়পুরহাট সোনালী ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর করা ১৪ লাখ ৮ হাজার টাকার ট্রেজারি চালান কপি জমা দিয়ে গত বছরের ২৫ নভেম্বর আদালতে আসামি সোহেল রানার জামিনের আবেদন করেন। জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তিন সপ্তাহের মধ্যে আপিল দায়েরের শর্তে ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় একজন বিজ্ঞ আইনজীবী ও একজন স্থানীয় ব্যক্তির জিম্মায় জামিনের আদেশ দিলে গত ২৮ নভেম্বর আসামি সোহেল রানা কারাগার থেকে মুক্ত হয়। পরবর্তী সময় গত ১৭ জানুয়ারি মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মোকারম চৌধুরী জুয়েল জয়পুরহাট সোনালী ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আদালতে আসামির জামিন আবেদনের সঙ্গে জমা দেয়া গত ২৫ নভেম্বর ৮৩ নম্বর চালানে কোনো টাকায় জমা দেয়া হয়নি। আদালতে জমা দেয়া ট্রেজারি চালানে ১৪ লাখ ৮ হাজার টাকা জমা দেখানো জয়পুরহাট সোনালী ব্যাংকের রশিদের সিল ও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। জয়পুরহাট জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসেও উক্ত টাকার ট্রেজারি চালান জমার সত্যতা মেলেনি। বিষয়টি জানাজানির পর জামিনপ্রাপ্ত আসামি সোহেল রানার জামিন বাতিল চেয়ে আইনজীবী আনিছুর রহমান জয়পুরহাট দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে আবেদন করলে আদালত বুধবার আসামি সোহেল রানার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন। একইভাবে জামিন আবেদনের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার জাল চালান জমা দিয়ে জয়পুরহাটের রুকিন্দিপুর গ্রামের আরমান হাবিব নামের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি গত বছরের ১১ নভেম্বর জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত হতে জামিন নিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়