বিজিবির অভিযান : কক্সবাজারে উদ্ধার ৩০ কোটি টাকার আইস

আগের সংবাদ

আলোচনার কেন্দ্রে ইসি আইন

পরের সংবাদ

জাতীয় সংসদে উত্থাপন আজই : ইসি গঠনে সার্চ কমিটি হবে আইন পাসের পর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : সংসদে আইন পাসের পরই সার্চ কমিটি চায় সরকার। আজ রবিবার সংসদে উত্থাপিত হবে নির্বাচন কমিশন আইন। যত দ্রুত সম্ভব তা পাস করা হবে। আইন অনুযায়ী, সার্চ কমিটি গঠন করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া হবে। সরকারের একাধিক সূত্র ভোরের কাগজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে সংলাপ শেষ হলেও ইসি নিয়োগে আগের মতো সার্চ কমিটি গঠনের কাজ এখনো শুরু হয়নি বলে জানিয়েছে বঙ্গভবন সূত্র। আইন পাসের পরই সার্চ কমিটি গঠনের ওপরই জোর দিয়েছেন তারা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে বহুল আলোচিত আইনটি সংসদে আজ রবিবার উঠছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ সংসদে তুলে সেটি পরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন তিনি। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিলটি আনা হচ্ছে। সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের জন্য খুব বেশি সময় দেয়া হবে না। দ্রুত বিলটি পাস করা হবে। এটি পাস হওয়ার পরই নতুন নির্বাচন কমিশন আইনের আলোকে নিয়োগ

করা হবে।
এদিকে সংসদে উঠলে আইনটি পাসে যে দেরি হবে না, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কাম এন্ড সি, নাথিং ইজ ইম্পসিবল। যেহেতু এটা জনদাবি, সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিলটি রবিবার সংসদে উত্থাপন করা হবে। এ সংসদে আইনটি পাস হবে। এ আইনের অধীনেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
সার্চ কমিটির আগেই আইন তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, সংসদে কোনো বিল উত্থাপন হলে সাধারণত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। সেজন্য কমিটিকে সময় দেয়া হয়। সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন আসার পর সংসদে তা নিয়ে আলোচনা শেষে পাস হয়। এই আইনটির ক্ষেত্রেও তাই হবে। যদি হাতে সময় থাকে তাহলে সার্চ কমিটি গঠনের আগেই আইন তৈরি হবে। আর একান্তই যদি সময় না থাকে তাহলে রাষ্ট্রপতির বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
তাড়াহুড়োর আইন ভালো হবে না, সাবেক সিইসি হুদা : নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার ক্ষেত্রে আরো সময় নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন দেখছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিদায় লগ্নে আকস্মিকভাবে নতুন আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর সংসদে পাসের তোড়জোড়ের মধ্যে এই মত জানালেন তিনি। প্রস্তাবিত আইনে অপূর্ণতা দেখার কথাও বলেন তিনি। গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাবেক সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রস্তাবিত খসড়া আইনে মনে হচ্ছে অনেক অপূর্ণতা রয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, এটি শুধু সার্চ কমিটি গঠনের জন্য।
আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি না করার পরামর্শ দিয়ে শামসুল হুদা বলেন, এই আইনটি যাতে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি ভালো আইনের জন্য প্রয়োজনে সময় নেয়া যেতে পারে। তাড়াহুড়া করে ত্রæটিপূর্ণ আইন প্রণয়ন কারও জন্যই কল্যাণকর হবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও অযোগ্যতার সুষ্পষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে। যাদের সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত নয়। ইসির কেউ দুর্নীতিতে জড়ালে তার বিচারের বিধানও আইনে রাখার সুপারিশ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনাররা কোনো দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে তাদের আইনানুগ বিচার হওয়া উচিত। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, তাই কোনো বিশেষ পদধারী ব্যক্তির অপরাধের বিচারের জন্য ইনডেমনিটি থাকা উচিত নয়। সবার মতামত নেয়ার ওপর জোর দিয়ে শামসুল হুদা বলেন, সত্যিকার অর্থে বর্তমান সংসদে জনপ্রতিনিধিত্ব নেই, তাই প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই নতুন কমিশন গঠন করতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। এক্ষেত্রে আইনটি সংসদে তোলা থেকে পাস করে গেজেট প্রকাশের জন্য হাতে সময় রয়েছে চার সপ্তাহ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়