বিজিবির অভিযান : কক্সবাজারে উদ্ধার ৩০ কোটি টাকার আইস

আগের সংবাদ

আলোচনার কেন্দ্রে ইসি আইন

পরের সংবাদ

ঘরে ঘরে জ্বর ও সর্দি : ঝিনাইদহ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে রোগীর ভিড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোকনুজ্জামান মিলন, ঝিনাইদহ থেকে : জেলায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। গত তিন দিনে এ জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়ে ঝিনাইদহ আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ঠাণ্ডা, কাশি, জ্বরে ভর্তি ১৯ জন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১০ জন ও নিউমোনিয়ায় ৩ জন। এদের মধ্যে একটি শিশু মারা গেছে। ডাক্তাররা বলেছেন, শীতের প্রকোপে শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
এবারের শীতে ঝিনাইদহে স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। এ সময় থেকেই ঝিনাইদহ অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। মানুষ শীতে কাহিল হয়ে পড়ে। এ কারণে মানুষের অসুস্থতাও বাড়তে থাকে। জানুয়ারি থেকে সেই পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে থাকে। বর্তমানে প্রতিটি ঘরে ঘরেই শীতজনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছে, আবার অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অবশ্য এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বর্তমানে ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তি শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। এদের অধিকাংশই জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শুক্রবারই ভর্তি হয়েছে ৩০ জন। বৃহস্পতিবার ৩২ জন ও বুধবার ছিল ৩৭ জন। ভর্তি এসব রোগীর বেশিরভাগই জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। ভর্তিকৃতদের মধ্যে তিনজন নিউমোনিয়া আক্রান্ত। এছাড়া শীতজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অসুস্থ এসব রোগীর মধ্যে ক্রোমোজম রোগে মহেশপুর উপজেলার মালাধরপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ১ দিনের শিশু শুক্রবার সকালে হাসপাতালে মারা গেছে। সদর উপজেলার ভগবতীতলা গ্রামের এক বছর বয়সি হুমাইরার মা হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, প্রচণ্ড শীতে গত সাত দিন ধরে মেয়ের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসায় কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে কিছুটা সুস্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এ জাতীয় রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ শিশু বর্তমানে হাসপাতালের এই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় বেডে সংকুলান না হওয়ায় তাদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। তারপরও সেখানে জায়গা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সেবিকারা বলেন, বর্তমানে ওয়ার্ডে শিশু রোগীর চাপ বেশি। বেশিরভাগই জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ঠাণ্ডাজনিত নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা কম। অবশ্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেশি রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার জানান, শীতের প্রকোপে কাহিল হয়ে শিশুরাই বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এ কারণে শীতে তারা বেশি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ সময়ে শিশুকে সুস্থ রাখতে হলে ঠাণ্ডা লাগতে দেয়া যাবে না। স্বাভাবিক গরম তাপমাত্রায় শিশুকে রাখতে হবে। সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জাবির আহমেদ বলেন, বর্তমান আবহাওয়ায় মাঝে মাঝে তীব্র শীত, আবার গরম অনুভূত হচ্ছে। এ কারণে শিশুরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। শীত বেশি পড়লে শিশুকে গরম কাপড় বেশি পরাতে হবে। আবার গরম থাকলে পাতলা কাপড় পরাতে হবে, যাতে শিশুর ঠাণ্ডা বা গরম না লাগে। এছাড়া বেশি শীত থাকলে শিশুকে প্রতিদিন গোসল না করালেও চলবে এবং বেশি পানি পান করাতে হবে। তবেই শিশু জ্বর বা শ্বাসকষ্ট রোগ এড়িয়ে সুস্থ থাকতে পারবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়