বিজিবির অভিযান : কক্সবাজারে উদ্ধার ৩০ কোটি টাকার আইস

আগের সংবাদ

আলোচনার কেন্দ্রে ইসি আইন

পরের সংবাদ

ইউপি নির্বাচন : প্রচার-প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি উধাও

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামী ৩১ জানুয়ারি দেশের ২১৯টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট নেয়া হবে। আর এসব নির্বাচন ঘিরে ঘোর করোনার মধ্যে প্রচারে স্বাস্থ্যবিধির বালাই দেখা যাচ্ছে না। এদিকে বিপুল সংখ্যক সমর্থকদের নিয়ে চেয়ারম্যান, মেম্বাররা প্রচারণার মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আর এসব কারণে করোনা সংক্রমণ দিনে দিনে ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ১৬ জানুয়ারি নাসিক নির্বাচনেও যেমন স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না, তেমনি ষষ্ঠধাপের ইউপি নির্বাচনেও নেই। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি ইসিসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে করোনা মহামারি ঠেকাতে গত ১০ জানুয়ারি ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। সব ধরনের সামাজিত অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। বাস, ট্রেন, লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের নির্দেশনা আসে। পরবর্তীতে গত ২১ জানুয়ারি আরো একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্কুল-কলেজ বন্ধ, সরকারি-বেসরকারি অফিসে অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ চালানো এবং বিয়ে বাড়িতে ১০০ জনের অধিক অতিথি যাতে না যান সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী সবাইকে করোনা টিকা সনদ প্রদর্শনের কথা বলা হয়। যদিও বাণিজ্যমেলায় স্বাস্থ্যবিধি বা কোনো রকম বিধিনিষেধ দেখা যায়নি। তেমনি স্বাস্থ্যবিধি দেখা যাচ্ছে না ইউনিয়ন পরিষদ ভোটের প্রচারেও।
এদিকে গত ১১ জানুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের পরে ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন বন্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। বরং আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাকি ৩ দফায় তফসিল দেয়া ইউপি নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় স্বাধীন সংস্থাটি।
এদিকে, আগামী ৩১ জানুয়ারি দেশের ২১৯টি ইউপিতে নির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা বর্তমানে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম। শত শত সমর্থকদের নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারো মুখে মাস্ক পর্যন্ত দেখা যায়নি। বাড়ি বাড়ি প্রচার থেকে শুরু করে করমর্দন, কোলাকুলি ইত্যাদি করে চলেছেন প্রার্থীরা। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। এতে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যখন করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, ওমিক্রনের দেখাও মিলছে। এমতাবস্থায় প্রচার-প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ইসি কোনো নির্দেশনা জারি করেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার জানান, এখনো নির্বাচন বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে আমরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠিয়েছি। এছাড়া যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই প্রচার করে তা মনিটরিং করছে ম্যাজিস্ট্রেটসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স। কয়েকটি ক্ষেত্রে জরিমানাও করা হয়েছে। তবে ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন হবে।
আবার এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, নির্বাচনে আমরা প্রার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছি। তা অনেকাংশে হয়তো প্রতিপালন হচ্ছে না। তবে নির্বাচনের দিন যাতে ভোটাররা স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়ায়, হাতে স্যানিটাইজার ও মাস্ক পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করে তা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য ইসি প্রতিটি কেন্দ্রে হাত ধোয়ার সাবান, পানি, টিসু ও স্যানিটাইজার সরবরাহ করেছে এবং করবে। বিগত নাসিক নির্বাচনেও এটা করা হয়েছিল। আগামী সব নির্বাচনে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট নেয়ার চেষ্টা করব। আর প্রচার-প্রচারণার সময় যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয়, অন্তত মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রচার নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রার্থীদের সতর্ক করেছেন। এসব নির্বাচনে অধিকাংশই ইভিএমে ভোট নিচ্ছে ইসি।
ষষ্ঠ ধাপে ২১৯ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ আগামী ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ৭ম ধাপে ১৩৭ ইউপিতে ৭ ফেব্রুয়ারি এবং শেষ ধাপে ৮টি ইউপিতে নির্বাচন হবে ১০ ফেব্রুয়ারি।
এর আগে পাঁচ ধাপে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। গত ২১ জুন প্রথম ধাপের ৩৬৯টি ইউপিতে ও ২০ সেপ্টেম্বর ও ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে দুই পর্বে ৮৩৩টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ১ হাজার ৭ ইউপিতে নির্বাচন হয়। ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমান কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়