ক্ষমা চেয়েছেন চীনা নাগরিক, টাকা চাননি সার্জেন্ট

আগের সংবাদ

জাতীয় পুরুষ বেসবল শুরু

পরের সংবাদ

বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন : ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণেও ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা সংক্রমণের ভীতিকর পরিস্থিতিতেও চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। মাসব্যাপী এ মেলা এখনো পুরোপুরিভাবে জমে ওঠেনি। সপ্তাহের পাঁচদিনই মেলা প্রাঙ্গণ থাকে প্রায় ফাঁকা। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর পূর্বাচলে সরিয়ে নেয়া এ মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণেও মানুষের ঢল নেমেছে বাণিজ্য মেলায়। গতকাল শুক্রবার পূর্বাচলে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ছুটির দিনগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়লেও বেচাকেনা খুব বাড়েনি। মেলায় বেশির ভাগ মানুষই ঘুরতে আসছেন। ঘুরেফিরে চলে যাচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ঢাকার ক্রেতা-দর্শনার্থীও বেশ কম। আশপাশের জেলাগুলো থেকে অনেকেই মেলায় আসছেন। তারা কেনাকাটার চেয়ে প্রথমবার নিজ চোখে বাণিজ্যমেলা দেখতে পারার দিকেই বেশি আগ্রহী। ভিড় বাড়লেও কিছু স্থানে জটলা বেশি। বিশেষত, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের (বিবিসিএফইসি) সামনে উন্মুক্ত স্থানে মানুষের আড্ডা লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে ছবি তোলার জন্য অনেকের হিড়িক। বিবিসিএফইসির ভেতরেও বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন এবং এর আশপাশের ফাঁকা স্থানগুলোতে মানুষের চাপ বেশি। সে তুলনায় দুটি এক্সিবিশন হলের স্টলগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থী কম।
মেলায় পণ্যের দোকানের তুলনায় খাবারের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় দেখা গেছে। পোশাক, ঘর সাজানোর উপকরণ ও ক্রোকারিজের দোকানেও ক্রেতা-দর্শনার্থীরা উঁকি দিচ্ছেন। কম দামের পণ্যের দোকানগুলোতেই ক্রেতারা বেশি ঝুঁকছেন। সে তুলনায় বড় বড় আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে ক্রেতা কম।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়ন থেকে মেলায় আসা কাইয়ুম ভোরের কাগজকে বলেন, প্রতি শুক্রবার মেলায় আসতে হয়। আত্মীয়-বন্ধুরা ফোন দেয় মেলায় আসার জন্য। কেনাকাটা বড় কথা নয়, আনন্দটাই বড়। মেলায় আসা আরেক দর্শনার্থী মানিক বলেন, পরিবারের ইচ্ছায় মেলায় আসতে হয়েছে। করোনার কারণে এবার আমার ইচ্ছে ছিল না। এছাড়া আগারগাঁওয়ে কয়েকবার যাওয়া হতো। এখন পূর্বাচলে হওয়ায় সে সুযোগ হচ্ছে না।
দিল্লি অ্যালুমিনিয়ামের এখলাসুর রহমান বলেন, অন্য বছর বাণিজ্য মেলায় শুক্রবারে কয়েক লাখ টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। সবাই ঘুরতে আসছেন, ক্রেতার সংখ্যা কম। দর্শনার্থীদের বেশির ভাগই আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। বেশির ভাগ বিক্রেতারা বলেছেন, ঢাকা থেকে যেসব ক্রেতা আসছেন, দূরত্ব ও পরিবহন জটিলতার কারণে তারা ভারী পণ্য কিনছেন না। তাই বড় বড় সামগ্রীর বিক্রি কম। অনেকে মেলায় এসে পণ্য পছন্দ করছেন, কিন্তু কিনছেন ঢাকার শো-রুম থেকে। ফলে বড় কোম্পানিগুলো বিক্রির চেয়ে পণ্যের অনলাইন প্রদর্শনী ও প্রচারণায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শুক্রবার জনসমাগম নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আরোপিত এই বিধিনিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাণিজ্যমেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। যদিও মেলায় প্রবেশের পরে অধিকাংশ ক্রেতা-দর্শনার্থী স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরোপিত বিধিনিষেধে বাণিজ্যমেলা বন্ধের বিষয়ে তো কিছু বলা নেই। তাই মেলা চলবে। নির্দেশনা মানাতে মেলা প্রাঙ্গণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে পেলেই জরিমানা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে বাণিজ্যমেলা : রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) চলছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আরোপিত এই বিধিনিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাণিজ্যমেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরোপিত বিধিনিষেধে বাণিজ্যমেলা বন্ধের বিষয়ে তো কিছু বলা নেই। গত বৃহস্পতিবার থেকে মেলা প্রাঙ্গণে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত শুরু করেছি। মাস্ক খোলা পেলেই জরিমানা করছি। ইপিবির সচিব বলেন, বিধিনিষেধে এ বিষয়ে যেভাবে আছে আমরা সেভাবে অনুসরণ করব। সরকারি নির্দেশনা আমরা মেনে চলব। গতকাল শুক্রবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পাঁচ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নির্দেশনায় বলা হয়- বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি মনিটর করবে।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়