ঢামেকে আগুন আতঙ্ক, রোগীর স্বজনদের ছুটাছুটি

আগের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

পরের সংবাদ

২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত ছাড়াল ১০ হাজার, মৃত্যু ৪

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে পাঁচ মাস পর দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার ১০ হাজারের ঘর ছাড়িয়ে গেল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সোয়া ৪১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৮৮৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নতুন রোগী পাওয়া গেছে দেশের ৬৪ জেলাতেই। একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১০ আগস্ট। সে দিন ১১ হাজার ১৬৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। বুধবার ৯ হাজার ৫০০ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসাবে গত একদিনে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৩৮৮ জন বা ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
জানুয়ারির প্রথমদিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪০০-এর নিচে, ৬ জানুয়ারি তা হাজার ছাড়ায়, ১৬ জানুয়ারি পেরিয়ে যায় ৫ হাজারের ঘর। এরপর মাত্র চার দিনে তা দ্বিগুণ হলো। গতকাল নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আরো বেড়ে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়েছে, যা গত বছরের ৫ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। সে দিন শনাক্তের হার ছিল ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ। মহামারির বছর গড়ানোর পর ডেল্টার দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর সংক্রমণের হার কমতে কমতে ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রভাবে ডিসেম্বরের শেষদিক থেকে আবার তা বাড়ছে। দৈনিক নমুনা পরীক্ষা বাড়লে এই হার ৪০ শতাংশও হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কারো কারো ধারণা। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৮২ জনে। গত একদিনে আরো চারজনের মৃত্যু হওয়ায় মহামারিতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ১৮০ জনে দাঁড়াল।
সরকারি হিসাবে গত একদিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৫৭৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৭০ হাজার ১৫৭ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ৮৫০ জন। ১০ জানুয়ারি ছিল ১৬ হাজার ৭১৩ জন হয়। অর্থাৎ মাত্র ১০ দিনে সক্রিয় রোগী বেড়ে প্রায় চার গুণ হয়েছে। মহামারির মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৭ হাজার ৮৪৩ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭২ শতাংশের বেশি। এ বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৭৩৪৯ জন, গাজীপুরে ১২৯ জন, নারায়ণগঞ্জে ১০৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৯৩০ জন, কক্সবাজারে ১৪১ জন, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ১৫৬ জন, বগুড়ায় ১৩৭ জন এবং সিলেট জেলায় ২২৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত একদিনে।
যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের একজন পুরুষ, তিনজন নারী। তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের। বাকি দুজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। একই বছর ১২ জানুয়ারি তা ১৬ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হন। প্র্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুবরণ করে, যা মহামারির মধ্যে একদিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ কোটি ৮০ লাখের বেশি রোগী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়