ঢামেকে আগুন আতঙ্ক, রোগীর স্বজনদের ছুটাছুটি

আগের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

পরের সংবাদ

বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত ‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সেগুনবাগিচা জামে মসজিদে জানাজার পর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পাঠকসমাদৃত থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র  স্রষ্টা ও সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেন। গত বুধবার বিকালে মৃত্যুর পর তার মরদেহ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ফ্রিজিং ভ্যানে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে রাখা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সেগুনবাগিচার বাসা ও সেবা প্রকাশনীতে তার মরদেহ আনা হয়। প্রিয় মানুষকে শেষবারের মতো দেখার জন্য তার বাসভবনে ভিড় করেন অসংখ্য লেখক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও স্বজন। এসেছিলেন প্রয়াত লেখকের শ্যালিকা ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনসহ শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্যরাও। প্রিয় মানুষকে হারানোর শোকে এ সময় অনেকেই অশ্রæসিক্ত হয়ে পড়েন। শোকাবহ পরিবেশে ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার বাতাস। এরপর বাদ জোহর সেগুনবাগিচা জামে মসজিদে জানাজার পর বাদ আছর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে আক্ষেপ প্রকাশ করেন পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও আত্মীয়-স্বজনরা। তারা বললেন, এই রকম গুণী মানুষকে রাষ্ট্র সম্মান জানায়নি। কিন্তু দেশের পাঠকরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কাজী আনোয়ার হোসেনকে সম্মানের আসনে রেখেছেন। পাঠকের ভালোবাসাই তার সারা জীবনের কর্মের অর্জন।
কাজী আনোয়ার হোসেনকে রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি না দেয়ায় আক্ষেপ করে তার চাচাতো ভাই কাজী রওনাক হোসেন বলেন, অনেক অযোগ্য লেখক রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়েছেন। কিন্তু কাজী আনোয়ার হোসেন যিনি এদেশের কিশোর-তরুণদের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করে অবক্ষয় থেকে মুক্ত রেখেছিলেন, সেই তিনি লেখক হিসেবে কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি। এটা আমাদের কষ্ট দেয়।
শ্রদ্ধা জানাতে এসে সেবা প্রকাশনীর স্বনামধন্য লেখক নিয়াজ মোরশেদ বলেন, এদেশের পাঠক

সৃষ্টিতে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। হুমায়ূন আহমেদের আগেই তিনি এ দেশে বই পড়ার পথটি তৈরি করেছিলেন। এমনকি জেলায় জেলায় নিজের গাড়িতে চড়ে মাইকিং করে বই বিক্রি করেছিলেন।
সেগুনবাগিচার বাসভবনে ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা একজন যোদ্ধা মানুষ ছিলেন। সবসময় সাহস নিয়ে বেঁচেছেন। তিনি পরিবার নিয়ে থাকতে পছন্দ করতেন।
এদিকে কাজী আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া শোক জানিয়ে বাণী দিয়েছে বাংলা একাডেমি।
গত ৩১ অক্টোবর কাজী আনোয়ার হোসেনের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সার তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর ব্রেইন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক হলে তাকে গত ১০ জানুয়ারি বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বুধবার বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়