ঢামেকে আগুন আতঙ্ক, রোগীর স্বজনদের ছুটাছুটি

আগের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

পরের সংবাদ

ফুলকপির গ্রাম কৃষ্ণনগর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জুটন বনিক, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে : প্রকৃতি তখনো কুয়াশার চাদরে ঢাকা। রশি টানা নৌকা দিয়ে গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা যায় শুধুই ফুলকপির ক্ষেত। ক্ষেতে নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ ক্ষেতের পরিচর্যায়, কেউ ক্ষেত থেকে কপি তুলছেন, আবার কেউ সেই কপি ভার দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাজারে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য। কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক কাজী আব্দুল হামিদ জানান, গ্রামের সবাই সবজিচাষি। প্রতিবারের মতো এবারো অধিক লাভের আশায় সবাই ফুলকপি চাষ করেছেন। সবার মতো তিনিও দেড় বিঘা জমিতে দেশি জাতের ফুলকপি চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত কপি বিক্রি করেছেন ৪৫ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন, এবার তার লাখ টাকার মতো ফুলকপি বিক্রি হবে।
এই গ্রামের আরেক ফুলকপি চাষি মো. হোসেন মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে কপির চারা লাগিয়েছেন। সর্বসাকুল্যে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আশা করছেন শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। কৃষ্ণনগর গ্রামের মনির হোসেন নামে এক যুবক জানান, তিনি এবার ৫০ হাজার টাকা খরচ করে জমিতে ফুলকপি লাগান। বৃষ্টিতে কিছু চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবারো কপির চারা রোপণ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করছেন এবার তার ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি হবে।
কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম জানান, এই গ্রামে ১১২টি পরিবার ও দুই হাজারের বেশি মানুষ বাস করেন। জমি ও বাড়ির আঙিনায় সবাই কমবেশি ফুলকপিসহ শীতকালীন সবজি চাষ করেন। পরিবারের সবাই মিলে পরিচর্যা করে বলে খরচ কম ও লাভ হয় বেশি। কৃষ্ণনগর গ্রামের মেম্বার আব্দুল আলীম বলেন, এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই সবজিচাষি। মাটির গুণেই এখানে ফুলকপিসহ সব ধরনের সবজির ভালো উৎপাদন হয়। এখানকার ফুলকপির আলাদা সুনাম ও কদর রয়েছে।
আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী হারু সাহা বলেন, কৃষ্ণনগর গ্রামের ফুলকপির স্বাদ বেশি। তাই ক্রেতাদের কাছে চাহিদাও অনেক বেশি। শীত মৌসুমের শুরু থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতারা অপেক্ষায় থাকেন কখন কৃষ্ণনগর গ্রামের কপি বাজারে আসবে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কৃষ্ণনগর গ্রামে প্রায় ২০-৩০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়। এই গ্রামে আগামসহ তিনবার ফুল কপি চাষ হয়। তারা বীজ থেকে চারা করে পর্যায়ক্রমে সেই চারা রোপণ করেন। ক্ষেতে রাসানিক সারের পরিবর্তে সবাই জৈবসার ও প্রচুর পরিমাণে গোবর ব্যবহার করেন। এছাড়া প্রতি বছরই নদীর পলি জমিতে এসে পড়ে। এতে জমি আরো উর্বর হয়ে ওঠে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, কৃষ্ণনগরে দেশীয় জাতের ফুলকপি চাষ করা হয়। এই ফুলকপি আকারে কিছুটা ছোট হলেও খেতে খুব স্বাদ। কদর থাকায় বাজারে চাহিদা অনেক বেশি। ফলন ভালো হয় বলে কৃষকরাও অনেক লাভবান হন। তিনি আরো জানান, কৃষি অফিস থেকে তাদের পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়