ঢামেকে আগুন আতঙ্ক, রোগীর স্বজনদের ছুটাছুটি

আগের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

পরের সংবাদ

জলদস্যুদের লুটকৃত মালামাল বিক্রির হাট সোনাদিয়ায় : প্রতি মাসে লেনদেন কোটি টাকা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার থেকে : জলদস্যুদের লুটকৃত মালামাল বিক্রির হাট এখন সোনায়িায়। প্রতি মাসে কোটি টাকার মালামাল কেনাবেচা হচ্ছে এখানে। যার ফলে বেপারোয়া হয়ে উঠেছে জলদস্যুরা। কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে প্রতিবাদকারীদের।
বঙ্গোপসাগরে লুটকৃত মাল নির্বিঘেœ বিক্রি করতে পারায় উৎসাহিত হচ্ছে জলদস্যুরা। এসব মালামাল কমমূল্যে কিনে চড়া দামে বিক্রি করে কোটি টাকা আয় করছে একটি সিন্ডিকেট। সোনাদিয়ার একরাম ও শাহিনের নেতৃত্বাধীন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রিক একটি চক্র জড়িত বলে অভিযোগ ফিশিং ট্রলার মালিকদের।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কুতুবজুম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবদুল গফুর নাগুকে হত্যার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠে জলদস্যুরা। এই হত্যাকাণ্ডের পর ক্রসফায়ারে নিহত হয় ঘটনার প্রধান আসামি বতইল্যা ও জাম্বু। একরামের ভাই মকছুদসহ কয়েকজন জলদস্যু র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করলে কিছু দিনের জন্য জলদস্যুতাও বন্ধ হয়ে যায় সোনাদিয়ার মোহনায়। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে মকছুদ ও তার ভাই একরাম এবং শাহিনের নেতৃত্বে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে জলদস্যুরা। বর্তমানে পুরো এলাকাই নিয়ন্ত্রণ করছে এই চক্রটি।
ঘটিভাঙ্গার এক সাবেক মেম্বার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বর্তমানে সোনাদিয়া এলাকা দিয়ে আর ফিশিং ট্রলার যেতে চায় না। একরাম, মকছুদ ও শাহিনের নিয়ন্ত্রণাধীন সিন্ডিকেটের আশ্রয়ে রয়েছে অন্তত ৩০-৩৫ জনের একটি জলদস্যু বাহিনী। ওই বাহিনীতে কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও মহেশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নের জলদস্যু রয়েছে। তারা বঙ্গোপসাগরে ফিশিং ট্রলার লুট করে এই সিন্ডিকেটের কাছে বেচে দেয়। তারা কেনা এসব মালামাল কক্সবাজারে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রভিত্তিক আরেকটি সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে থাকে। তাদের কারণে অসংখ্য ট্রলার মালিক সর্বস্বান্ত হয়েছেন। বদরখালীর ট্রলার মালিক আমিনুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে লুট করা মালামাল কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া থেকে আবার কিনেছি। প্রতি বছর এই সমস্যা মোকাবিলা করে আসছি। আমরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।
কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, এদের অত্যাচারে অনেক শ্রমিক পেশা পরিবর্তন করেছেন। সাগরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। মূলত, জলদস্যুরা মালামাল বিক্রি করতে না পারলে জলদস্যুতা অনেক কমে যেত। বর্তমানে সোনাদিয়ার এই সিন্ডিকেটের কারণে উৎসাহিত হচ্ছে জলদস্যুরা। অনেকেই আত্মসমর্পণ করে প্রাপ্ত সরকারি অর্থ অপচয় করছে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে। বিভিন্ন সময় দেখা যায় গডফাদাররাই বিভিন্ন লোকজনকে জলদস্যু বলে আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দিচ্ছে। এটি শুধুমাত্র নিজেদের আড়াল করার কৌশল। সোনাদিয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে না এলে সমস্যা আরো জোরদার হবে।
সিন্ডিকেটপ্রধান সোনাদিয়ার একরাম বলেন, তারা এসব কাজে জড়িত নয়। প্রয়োজনে তারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করে।
মহেশখালী থানার ওসি আবদুল হাই জানান, কোনো অপরাধী ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই। পুলিশ তথ্য পেলেই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। জলদস্যুতাসহ সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে না। সন্ত্রাসী যেই হোক ছাড় পাবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়