ঢামেকে আগুন আতঙ্ক, রোগীর স্বজনদের ছুটাছুটি

আগের সংবাদ

কড়া নির্দেশনা কার্যকরে ঢিলেমি

পরের সংবাদ

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত : রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস-আইসিজে) মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তোলা আপত্তির ওপর গণশুনানি শুরু হচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি। গত বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিজে জানায়, নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে ২১, ২৩, ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি এই শুনানির তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। মহামারি বিধি মেনে শুনানিকালে আদালতের কিছু সদস্য গ্রেট হল অব জাস্টিসে উপস্থিত থাকবেন। বাকিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
এছাড়া কূটনৈতিক কোর, গণমাধ্যম কর্মী ও জনসাধারণ আদালতের ওয়েবসাইট ও ইউএন ওয়েব টিভির সরাসরি ওয়েব কাস্টের মাধ্যমে এই শুনানি দেখতে পারবেন। রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যার অভিযোগ এনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা এ মামলার বিচারে আইসিজের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করেছে মিয়ানমারের জান্তা। এবারের গণশুনানি হবে মূলত মিয়ানমারের সেই আপত্তির ওপর। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অভিযোগকারী গাম্বিয়া এবং অভিযুক্ত মিয়ানমারকে তাদের আইনি যুক্তি দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল আইসিজে। গাম্বিয়াকে ওই বছরের ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের অভিযোগের বিষয়ে আইনি যুক্তিগুলো উপস্থাপন করতে বলা হয়। অন্যদিকে মিয়ানমারকে তাদের নির্দোষিতার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২০২১ সালের

২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়া হয়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আইসিজেতে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানি করা অং সান সু কি এখন নিজেই সামরিক জান্তার হাতে কারাবন্দি। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে এ মামলার কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। পাঁচ বছর আগে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে দেশটি ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এ মামলায়। হেগের পিস প্যালেসে ২০১৯ সালের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার ওপর প্রাথমিক শুনানি হয়। তাতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়কমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানি করেন নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু কি, যিনি নিজেই এখন মিয়ানমারের জান্তার হাতেই বন্দি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুনানির ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে জরুরি ভিত্তিতে চার দফা অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিল আইসিজে। সেখানে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বা কোনো পক্ষ এমন কিছু করতে পারবে না, যা গণহত্যা হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। গণহত্যার অভিযোগের সমস্ত আলামত তাদের সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু তার পরের দুই বছরে দেশটির পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নেয়নি। বরং রাখাইনসহ সেদেশের বিভিন্ন এলাকায় জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের নতুন নতুন খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারে। এ আদালত কোনো ব্যক্তিবিশেষকে সাজা দিতে পারে না, যেমনটি পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসি আলাদাভাবে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনা তদন্ত করছে। আইসিজেতে মামলা হলে আদালতের সিদ্ধান্ত মানার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে সদস্য দেশগুলোর ওপর। আর সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করারও কোনো সুযোগ নেই। তবে সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করার কোনো ক্ষমতা নেই এ আদালতের। সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত হওয়ার বহু উদাহরণ রয়েছে অতীতে। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায় আসতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়