সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি মানতে কেন এত অনীহা?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রায় দুই বছর ধরে করোনার দাপটে সারা বিশ্বে এক নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই অদৃশ্য ঘাতক এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে ফেলে দিয়েছে হুমকির মুখে। এরই মধ্যে ওমিক্রনের ছোবল নতুন করে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। ওমিক্রনের ছোবল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারেনি। দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে ওমিক্রন মোকাবিলায়। কিন্তু এই ১১ দফার বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব হচ্ছে সেটা নিয়েই তৈরি হয়েছে বড় প্রশ্ন। ১১ দফার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হলো মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা। ঘরের বাইরে সবাইকে মাস্ক পরতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কতজন মানছে সে নির্দেশনা? বিভিন্ন ধরনের জরিপে উঠে এসেছে যে দেশে মাস্ক ব্যবহারের হার এখনো ১৩-১৪ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। সাধারণ জনগণ নিয়মিত মাস্ক পরছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে এবং নিয়ম অমান্যকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতি চরম অবহেলা লক্ষ করা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে ৩টি বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়। সেগুলো হলো মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুব চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই মাস্ক ব্যবহারের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মাস্ক পরিধান করলে শুধু যে করোনার ছোবল থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বিষয়টি এমন নয়, ধুলাবালি এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণু ও দূষণের কবল থেকেও নিজেকে রক্ষা করা যায়। কিন্তু মাস্ক ব্যবহার বিষয়ক এখনো পর্যাপ্ত সতর্কতা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়নি। যারা মাস্ক ব্যবহার করে না তাদের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হলে খোঁড়া যুক্তি ও অজুহাতের শেষ নেই। হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিংমল, বাজার ও পাবলিক স্থানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি অনীহা দেখা গেছে। যে অঞ্চলে যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় তখন মানুষ কিছুটা নিয়ম মানার চেষ্টা করে। কিন্তু আদালত পরিচালনা শেষ হলেই আগের অবস্থায় ফিরে যায় জনতা। ১১ দফা নির্দেশনার মধ্যে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে টিকা সনদ প্রদর্শন সাপেক্ষে খাবার গ্রহণের বিধান রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ম মেনে চলার প্রতি হোটেল কর্তৃপক্ষের রয়েছে চরম অবহেলা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, জনগণ যদি স্বাস্থ্যবিধি সঠিক নিয়মে না মানে তাহলে লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে সরকারকে। কিন্তু লকডাউন অর্থনীতির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই আপাতত সমাধান বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ১১ দফা মেনে চলতে সবাইকে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সব শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা নিশ্চিত করে বিদ্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে। ১১ দফা নির্দেশনার মধ্যে উন্মুক্ত স্থানে সভা-সমাবেশ বারণ করা হয়েছে।
ওমিক্রন মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা টিকার কথা বলেছেন বিশেষ করে বুস্টার ডোজের ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের এত অধিক জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় আনা মোটেও সহজ বিষয় নয়। ওমিক্রনের ছোবলকে তুচ্ছভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া। যারা মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছে তাদের বেশি বেশি জরিমানার আওতায় আনতে হবে। মোট কথা যে যেখানে আছে সেখান থেকেই সচেতন থাকতে হবে। ৫ টাকার একটি মাস্ক একটি জীবন বাঁচাতে পারে, এই সত্যটি সাধারণ জনগণের মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দিতে হবে। মোট কথা একটি জাগরণ দরকার, যে জাগরণে সবার অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

মাজহার মান্নান : সহকারী অধ্যাপক
বি এ এফ শাহীন কলেজ, কুর্মিটোলা
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়