সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

শেষ বিদায়ের ঘণ্টাধ্বনি শুনি ওমিক্রনে : প্যানডেমিক নয়, এনডেমিক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কোভিড মহামারি কবে শেষ হবে? কবে ফিরে যাব স্বাভাবিক জীবনে? কবে ফিরে যাব পাহাড়ে? এ প্রশ্ন মনে জাগেনি গত দু’বছরে, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আশার কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা, শিগগিরই, হয়তো খুব শিগগিরই! তাদের ধারণা, একদিকে যেমন করোনার ভ্যারিয়েন্ট উৎপাদনের ক্ষমতা দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে, তেমনি টিকা দেয়ার কারণে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ফলে, ধরে নেয়া যায়, দিন বুঝি এবার ফুরিয়ে এলো মহামারির।
তারা বলছেন ইতোমধ্যেই কোভিড মহামারি শেষ হতে শুরু করেছে। লক্ষণ স্পষ্ট। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এর পরে কী? জীবন কি আগের অবস্থায় ফিরবে, নাকি, তৈরি হবে কোনো নতুন পরিস্থিতি। ভাইরাসটি কি এই পৃথিবী থেকে চিরতরে উধাও হবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোনো সন্দেহ নেই যে কোভিড রয়ে যাবে, কিন্তু সেটার প্যানডেমিক’ রূপ নয়, থাকবে ‘এনডেমিক’ রূপ নিয়ে। অর্থাৎ সে থেকে যাবে সর্দিকাশি-ফ্লু ইত্যাদি আটপৌরে অসুখের মতোই একটি রূপ নিয়ে, যেসব অসুখের সঙ্গে সহাবস্থানে ইতোমধ্যেই প্রায় ‘অভ্যস্ত’ হয়ে উঠেছি আমরা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত দু’বছরে পৃথিবীর ৩২ কোটির বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বহু মানুষ টিকা নিয়েছেন। ফলে তাদের দেহে ভাইরাস প্রতিরোধের এন্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। প্রতিরোধের জ্ঞানও তৈরি হয়েছে মানবদেহে। চীনের উহান শহরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যখন নতুন এই ভাইরাসটির উৎপত্তি হয় তখন দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার কাছে এটি ছিল একেবারেই অচেনা ও অজানা।
এর সঙ্গে লড়াইয়ের অভিজ্ঞান ছিল না তার। একই সঙ্গে ছিল না কোনো ওষুধ, কোনো টিকাও। কিন্তু এর মধ্যে মানুষের দেহে কোভিড মোকাবিলার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। একে পরাস্ত করার অভিজ্ঞতাও অর্জন হয়েছে তাদের। ফলে ভাইরাসটি এখন আগের তুলনায় অনেক দুর্বল। যেমন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এটি অতি-সংক্রামক হলেও সেইরকম প্রাণ-সংহারক নয়। রোগীকে আগের মতো কাবু করতে পারে না সে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর সামনে দুটো সম্ভাবনা এখন। হয় কোভিড পুরোপুরি নির্মূল হবে; যেমন, পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে ঘটেছে ইবোলা ভাইরাসের বেলায়। অথবা এটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে আমাদের মধ্যে দীর্ঘসময় ধরে রয়ে যাবে, সাধারণ সর্দিকাশি, এইচআইভি, হাম, ম্যালেরিয়া, য²ার মতো। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের মহামারি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর আজরা গানি এ ব্যাপারে বলেন, আমরা দ্রুত এনডেমিক স্তরে চলে যাব। মনে হচ্ছে অনেক সময় লাগছে, কিন্তু মনে রাখতে হবে, মাত্র এক বছর আগে লোকজনকে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। এই টিকার কারণেই আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীন জীবনযাপন করতে পারছি।
বিজ্ঞানীরা আরো বলছেন, এটা মনে রাখা জরুরি যে এনডেমিক সব সময় দুর্বল হয় না। স্মলপক্স কয়েক হাজার বছর এনডেমিক রোগ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। যদিও এতে বহু মানুষ নিয়মিত মারা যাচ্ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে যত মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয় তার এক-তৃতীয়াংশেরই পরিণতি- মৃত্যু। ম্যালেরিয়াও একটি এনডেমিক রোগ যাতে প্রতি বছর বিশ্বে ছয় লাখ মানুষ মারা যায়। ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জুলিয়ান হিসকক্স এ ব্যাপারে বলছেন, মহামারি শেষ হতে শুরু করেছে।
অন্তত যুক্তরাজ্যে। আমার মনে হয় ২০২২ সালে আমাদের জীবন আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। করোনার দুর্বল ভ্যারিয়েণ্ট ওমিক্রনই তার অন্যতম লক্ষণ। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এটি যত বেশি ছড়াবে ততই দুর্বল হবে ভাইরাস। এবং এর মধ্য দিয়েই অবসান ঘটবে শতাব্দীর সবচেয়ে প্রাণঘাতী স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়