সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা : পদধারী আ.লীগ নেতারাই মানেন না দলীয় সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বারবার নিজের ভাইকে প্রার্থী করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান সুজার বিরুদ্ধে। চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পান বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল হোসেন।
মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাই-বাছাই শেষে দেখা যায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাই সামসুজ্জোহা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তহিদুল ইসলাম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সফিকুল ইসলাম ও দছিম উদ্দীন।
গত ১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাই সামসুজ্জোহা মারা গেলে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করেন। বর্তমানে ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
স্থগিত হওয়া ওই ইউনিয়নের নির্বাচন ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে নতুন করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক ও কামারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান তানু।
স্থানীয় ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের  সভাপতি ও পৌর মেয়র এড. ওয়াহিদুজ্জামান সুজা নিজের আধিপত্যকে বিস্তার করতে এবং পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে দায়িত্বশীল পদে থেকে বারবার নিজের ভাইকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাচ্ছেন। অনুষ্ঠিত হওয়া চারটি ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্বশীল নেতাদের ছত্রছায়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনে বিদ্রোহী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের আশ্রয়দাতাদের তালিকা করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তাদের পদ-পদবির ক্ষেত্রে এসব বিষয়

কঠোরভাবে বিবেচনায় নেয়া হবে। ঝলইশালশিরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বোদা পৌর মেয়রের পরিবার থেকে বারবারই বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন তার ভাইয়েরা। এতে তার সাপোর্ট না থাকলে তো হতো না। এ ধরনের কাজে আমাদের দলীয়সহ সাধারণ ভোটারদের মনে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মনিরুজ্জামান তানু বলেন, এই ইউনিয়নে আমার বাবা ৩৫ বছর ও আমার বড় ভাই সামসুজ্জোহা ৩৩ বছর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এ কারণে আমাদের প্রতি জনগণের একটা অন্য রকম ভালোবাসা কাজ করে। তাই জনগণের পীড়াপীড়িতে আমি প্রার্থী হয়েছি।
ঝলইশালশিরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুর হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ভালোবেসে মনোনয়ন দিয়েছেন। এ কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জনগণও আমার পক্ষে। জনগণ পাশে থাকলে আমি এবারো জিতব।
বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আলম টবি বলেন, ওয়াহিদুজ্জামান সুজা তার মৃত্যু পথযাত্রী বড় ভাইকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঝলইশালশিরি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন। এবার তারই ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক মনিরুজ্জামান তানুকে প্রার্থী করেছেন। আমি যতটুকু শুনেছি তিনি নির্বাচন করবেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না। এখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রেলপথমন্ত্রী এড. নুরুল ইসলাম সুজন সিদ্ধান্ত নেবেন। ইউপি নির্বাচনে কেউ বিদ্রোহী হলে তাকে বহিষ্কার করবেন কিনা। যদিও এর আগের বোদা উপজেলার ৯টি ইউপির নির্বাচনে বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করেনি জেলা কমিটি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বোদা পৌরসভার মেয়র এড. ওয়াহিদুজ্জামান সুজা বলেন, আমি আমার ভাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে অনেকবার নিষেধ করেছি। এ কারণে তার সঙ্গে আমার এক ধরনের কথা বলাই বন্ধ হয়ে গেছে। জনগণের চাপে হয়তো সে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত স¤্রাট বলেন, ঝলইশালশিরি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় গত ১৫ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক মনিরুজ্জামান তানুকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। তার বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কেন্দ্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়