সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

তদন্ত কমিটি গঠন নিরাপত্তা জোরদার : চবি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১৩

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল বুধবার দুপুরে উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে এ কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত চবির শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১৩ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণেরও শব্দ শোনা যায়। বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের দাবি, রাত ১২টার দিকে বিনা উসকানিতে সিএফসির নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে এসে তাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায়। পরে তারা প্রতিহত করেছেন। এদিকে সিএফসির নেতাকর্মীদের ভাষ্য, কয়েকদিন ধরে বিজয়ের নেতাকর্মীরা ‘স্লেজিং’ করছেন। এ কারণে তারা বাধা দিয়েছেন।
এ নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে চবি উপাচার্য দপ্তরের সিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে- সিসি-ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো, গুরুত্বপূর্ণ স্পটগুলোতে রাতে বাতির ব্যবস্থা এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
চবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদের জড়ো হওয়া ও পরের দিন দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সংঘর্ষের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিতে সহকারী প্রক্টর ড. রামেন্দু পাড়িয়ালকে আহ্বায়ক, আরেক সহকারী প্রক্টর এস এম জিয়াউল ইসলামকে সদস্য সচিব, সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোরশেদুল আলম ও শাহ আমানত হলের আবাসিক শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ রোমান শুভকে সদস্য রাখা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কোনো অপরাধীকে আমরা ছাড় দেব না। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বিজয়ের নেতাকর্মীদের অনেকে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে ছিলেন। আর সিএফসির নেতাকর্মীরা ছিলেন শাহ আমানত হলে। দুপক্ষের কাছেই রামদা ও লাঠিসোঁটা ছিল। একপর্যায়ে তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় সিএফসির ৫ জন এবং বিজয়ের অন্তত ৮ জন কর্মী আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, পাথরের আঘাত ও দায়ের কোপ থাকায় তিন কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের এখানে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুই পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এই দুই পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিএফসির নেতা রেজাউল হককে সভাপতি ও সিক্সটি নাইনের নেতা ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু প্রায় আড়াই বছরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এ নিয়ে পদপ্রত্যাশীরা ক্ষুব্ধ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়