সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় বাড়ায় ব্যাংক ঋণ বেড়েছে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে করোনার প্রভাব কমে আসায় অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৪.৬৫ শতাংশ। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ২১৯ কোটি টাকার বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারির ক্ষত কাটিয়ে উঠছে দেশের অর্থনীতি। এখনো রাজস্ব আদায়ের হার সেভাবে বাড়েনি। সরকারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ ও বার্ষিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে (এডিপি) অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে। বিশেষ করে মেগা প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম পুরোদমে চালু রয়েছে। এজন্য সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বেড়েছে। স¤প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে শরিয়াভিত্তিক ইসলামী বন্ড ‘সুকুক’ ছেড়ে ৩৪ প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছে সরকার।
গত ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে নিলামে বন্ড বিক্রি করে প্রথম দফায় ৫ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। এই বন্ডের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ বার্ষিক হারে ভাড়া (ইজারা) দেবে সরকার। এ বন্ডের মেয়াদ হবে ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ৩০ ডিসেম্বর ২০২৬ সাল পর্যন্ত। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ট্রেজারি-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, সরকারের বছর শেষে বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করতে হয়, তাই ডিসেম্বরে এসে ঋণ বেড়েছে। তবে নতুন বছরে আবার কমে আসবে। কারণ জানুয়ারি মাসের অ্যাকশন ক্যালেন্ডারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে টাকা উত্তোলনের পরিমাণ খুবই কম দেয়া হয়েছে। এদিকে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনার প্রভাবে সারাদেশে লকডাউন ছিল। এ কারণে উন্নয়ন বাজেটের ব্যয় একেবারেই শ্লথগতিতে ছিল। সে কারণে সেই অর্থবছরে সরকার ব্যাংক ঋণ নিয়েছে মাত্র ২৬ হাজার কোটি। যদিও আগের অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণ ছিল ৭২ হাজার কোটি টাকার বেশি।
সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাসিকভিত্তিক এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে সরকার ব্যয় করেছে ৪৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৮ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শতাংশ হিসেবে বেড়েছে প্রায় ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। একই সঙ্গে তার আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। করোনার কারণে বেসরকারি ঋণের হার নেমে এসেছিল সর্বনি¤েœ। তবে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে খাতটি। এদিকে সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ঋণ নির্ধারণ করেছে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ছয় মাসে ঋণ নিয়েছে ৩৩ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে আগের ঋণের পরিশোধ ছিল ১৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। সে হিসেবে নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা।
সরকারের চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল ব্যাংক খাত।
এ ব্যাপারে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার প্রতি অর্থবছরেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারে। চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আদায় কম, যা সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, সরকারের অতিরিক্ত ঋণের ফলে বিদ্যমান তারল্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। এ পরিস্থিতি এড়াতে সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়