দুদকের মামলা : অব্যাহতি পেতে হাইকোর্টে ওসি প্রদীপের আবেদন

আগের সংবাদ

‘কাগুজে’ বিদেশি বিনিয়োগ : সাড়া মেলে নিবন্ধনের এক-তৃতীয়াংশের,হ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সুশাসনের অভাব

পরের সংবাদ

সংসারের ঘানি টানছে ৮ বছরের শিশু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এ আর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন (ভোলা) থেকে : খিলিপান বিক্রি করে অভাবের সংসারের ঘানি টানছে ৮ বছরের শিশু বাহারুল মোকতার। সে চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মৃত মোতাছিন মোকতারের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে অভাবের সংসারের ব্যয় মিটানোর জন্য স্থানীয় বাজারের অলিগলিতে খিলিপান বিক্রি করে বাহারুল। বন্ধুরা যখন খেলা করে বাহারুল তখন দোকানির কাছ থেকে পাইকারি পান কিনে বাজারে নিয়ে আসে বিক্রির জন্য।
বাহারুলের বাবা মোতাসিন মোকতার আসলামপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মাছ বিক্রি করতেন। দীর্ঘদিন লিভারের জটিলতায় অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার অভাবে গত বছর মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নেন। বাবার মৃত্যুর পরে ঋণের ওই টাকা পরিশোধে এবং সংসারের অভাব ঘুচানোর জন্য মাত্র ৮ বছর বয়সেই সে উপার্জনের হাল ধরেছে। সে খিলিপানের বাক্স কাঁধে নিয়ে ঘুরছে।
বাহারুলরা ২ ভাই ও ১ বোন। বড় বোন স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়লেও অভাবের কারণে তা বন্ধের পথে। বাহারুল সংসারের ছোট ছেলে। তার বড় ভাই শাহারুল (১২) বাজারে একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করছে। বাহারুল স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বাবা মারা যান।
শিশু বাহারুল জানায়, আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই। আমার বাবাকে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। যদি পড়ালেখা করার সুযোগ পাই তাহলে ডাক্তার হয়ে দরিদ্র অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই।
বাহারুলের মা নাছিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ হলে টাকার জন্য ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। স্বামীর মৃত্যুর আগে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সুদে ঋণ নেই। এখন সংসারে অনেক অভাব-অনটন চলছে। আমাদের সহযোগিতা করার মতো কাউকেই পাশে পাইনি। যদি কোনো সহায়তা পাই তাহলে সন্তানদের পড়ালেখা করাতে চাই।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন হোসেন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা ওই শিশুটিকে শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনার জন্য কাজ করব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল নোমান রাহুল বলেন, শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তির পাশাপাশি শিক্ষা উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়